চার-ছক্কার লড়াই শুরু আজ

স্টাফ রিপোর্টার: জিম্বাবুয়েকে  ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে উড়ছে বাংলাদেশ। কিন্তু জিম্বাবুয়ে শিবিরের চিত্রটা  ঠিক বিপরীত। নিজ দেশে আফগানিস্তানের সাথে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে বাংলাদেশে এসেও ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলো তারা। কিন্তু বিধি বাম! যেখানে ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা পারেনি সেখানে তাদের না পারারই কথা। আজ বাংলাদেশের বিপক্ষে ২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে দলের অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসের কথা বললেও বাস্তবতা যে ভিন্ন তা সবারই জানা। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের পর দশম স্থানে থাকলেও ঘরের মাঠে তারা কতোটা ভয়ঙ্কর তা ভালোভাবেই জানে চিগুম্বুরার দল। অন্যদিকে বাংলাদেশ অধিনায়ক আজও জয়ের লক্ষ্য স্থির করেই মাঠে নামছেন। যদিও পরিসংখ্যানের বাস্তবতা খুব ভালোভাবেই জানেন তিনি। এ পর্যন্ত ৪৪ ম্যাচে জয় মাত্র ১২টি। তাই জিততে হলে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি এমন খেলা যেখানে আগে থেকে অনুমানের সুযোগ নেই। সবসময় আক্রমণে থাকতে হয়, রক্ষণের জায়গা  নেই। সেখানে ১-২টা উইকেট পড়ে গেলে বা  যে কোনো কিছু হলে, বড় দল-ছোট দলের পার্থক্য কমে আসে। তবে সেটা নেতিবাচক ভাবনা আমি মনে করি। ইতিবাচকভাবে যদি ভাবি, আমরা ভালো খেলছি, সেটা যদি ধরে রাখতে পারি, পরিকল্পনা যেমন থাকে সেসব যদি বাস্তবায়ন করতে পারি, আশা করি সমস্যা হবে না।’ বাংলাদেশের তুলনায় জিম্বাবুয়ের পরিসংখ্যানও মজবুত নয়। ৪০ ম্যাচ খেলে ৭ জয়। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে ২ হার। ২০০৬ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি দেখায় হারের মুখ দেখেছিলো জিম্বাবুয়ে। এরপর ২০১৩ সালেও দ্বিতীয় ম্যাচে জিততে পারেনি। একমাত্র জয়টি তারা পেয়েছিলো এরপরই বাংলাদেশ ১৬২ রান করেছিলো ৮ উইকেট হারিয়ে। জবাবে ৬ উইকেটে জয় পেয়েছিলো তারা। দেশের মাটিতে ১৭টি ম্যাচ খেলে ৫টি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে সর্বশেষ বড় জয় পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিন্তু পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২ ম্যাচের সিরিজে  হেরে টি-টোয়েন্টি জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি। তখন থেকে দলের অধিনায়কের লক্ষ্য একটি সেরা টি-টোয়েন্টি কম্বিনেশনের দল। কিন্তু এবারও সেরা কম্বিনেশন নিয়ে মাঠে নামা হচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়কের। কারণ বাংলাদেশের সেরা টি-টোয়েন্টি তারকা সাকিব আল হাসান কন্যাসন্তানের পিতা হওয়াতে এখন ছুটিতে আছেন। তাই অধিনায়ক মনে করেন বিশ্বসেরা এই তারকাকে ছাড়া দল ভারসাম্যপূর্ণ হয় না। তবে যে দল পেয়েছেন তা নিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত টাইগার অধিনায়ক। সাকিব ও সৌম্য সরকারের অভাব নিয়ে তিনি বলেন, সাকিব সবসময়ই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার।  সাকিব না থাকা মানে আরেকজন ক্রিকেটারকে দেখার সুযোগ।

আজ দল কেমন হবে এ বিষয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, ক্রিকেটার ধরে নাম বলা বেশ কঠিন। কাউকে নিয়ে আলোচনা হয়নি। তিনজন সিমার নিয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত সফল হয়েছি। এই বছর বেশিরভাগ ম্যাচই এভাবে জিতেছি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক ম্যাচে, ৮ ব্যাটসম্যান, ১ স্পিনার, ২ সিমার ছিলো, আমরা ম্যাচটা হেরেছি। কিন্তু ৮ ব্যাটসম্যান ও ৩ সিমার নিয়ে জিতেছি। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা চিন্তা করতে হবে,  সেই সাথে নিজেদের শক্তির জায়গাটাও করতে হবে।’ তামিম ইকবালের সাথে ইমরুল কায়েসকেই আজ ওপেন করতে দেখা যাবে। এরপর লিটন, মুশফিক, সাব্বির, নাসির। পেস বোলিংয়ে মাশরাফির নেতৃত্বে মুস্তাফিজ আর আল আমিনকেও দেখা যেতে পারে। আর স্পিনে সাকিবের বিকল্প হিসেবে আরাফাত সানি আছেনই। সেই সাথে নাসির, সাব্বির  ও মাহমুদুল্লাহও  দলের প্রয়োজনে বল হাতে উইকেট এনে দিতে পারেন তার বড় প্রমাণ ওয়ানডে সিরিজেই। গতকাল দুপুরে সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেল থেকে অনুশীলন শুরু করেন। তবে মিরপুর মাঠে জিম্বাবুয়ে অনুশীলন করলেও বাংলাদেশ দল করে ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে। দলের সাথে অনুশীলন করেছেন স্কোয়াডে না থাকা তাসকিনও। বাংলাদেশের  বিপক্ষে মাঠে নামার আগে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক অবশ্য নিজেদের একটি দিক থেকে এগিয়ে রাখছেন তাহলো ক্রিকেটের ক্ষুদ্র এই ফরমেটে দু দল মুখোমুখি হয়েছে মাত্র তিনবার। তাই দু দলের জন্যই থাকছে সমান সুযোগ।

Leave a comment