মাথাভাঙ্গা মনিটর: কারও নাক ডাকছে। রাতের নীরবতা ভেঙে বিচিত্র স্বরে বিচিত্র লয়ে সে ডেকে যাচ্ছে। শব্দ কখনো বাড়ছে কখনো কমছে। পাশের ঘরে হলে না হয় দরজা-জানালা বন্ধ করে, হালকা শব্দে গান ছেড়ে কোনো না কোনোভাবে বাঁচলেন। কিন্তু নাক ডাকেন এমন কারও সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে হলে রাতের ঘুমের একেবারে দফারফা।
আপনার যদি কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়া ক্রমাগত মাথাব্যথা, ক্লান্তি ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে তা নাক ডাকার কারণে হতে পারে। এছাড়া নাক ডাকা একটি বিরক্তিকর বিষয় ছাড়াও একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যাও বটে। নাক ডাকার ফলে পরবর্তীতে নিদ্রাহীনতার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
তাই নাক ডাকা সমস্যাকে অবহেলা নয় মোটেই। সমস্যাটি কীভাবে দূর করা যায় সে বিষয়ে ভাবতে হবে। ঘরোয়াভাবে খুব সহজে এবং বেশ সুস্বাদু উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। জানতে চান কীভাবে, চলুন তবে দেখে নেয়া যাক। ১. গাজর-আপেলের জুস শুনতে সাধারণ মনে হলেও এ জুসের রয়েছে শ্বাসনালী কিছুটা চওড়া ও শ্বাসনালীর মিউকাস দ্রুত নিঃসরণের ক্ষমতা যা নাক ডাকা থেকে মুক্তি দিতে বেশ কার্যকর। প্রস্তুত প্রণালী- ২টি আপেল ছোটো ছোটো খণ্ডে কেটে নিন এবং ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করুন। এবার ২টি গাজর কেটে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর একটি লেবুর চার ভাগের এক ভাগ কেটে রস চিপে এতে দিয়ে দিন। ১ চা চামচ আদা কুচি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। কিছুটা পানি দিয়ে বেশ ভালো করে ব্লেন্ড করে নিয়ে ছেঁকে নিন। এ পানীয়টি প্রতিদিন পান করুন। নাক ডাকার সমস্যা দূরে পালাবে। ২. হলুদের চা।
হলুদ প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। এটিও বেশ কার্যকর নাক ডাকা সমস্যার সমাধানে। প্রস্তুত প্রণালী ২ কাপ পরিমাণ পানি চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। এতে ১ চা চামচ পরিমাণ কাঁচা হলুদ বাটা দিয়ে দিন (গুঁড়ো হলেও চলবে)। এবার আবার জ্বাল করতে থাকুন। যখন পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণে চলে আসবে তখন তা নামিয়ে ছেঁকে ফেলুন। এবার ১-২ চা চামচ মধু ও ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন ঘুমুতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে পান করে নেবেন। দেখবেন নাক ডাকার সমস্যা দূর হয়ে যাবে। নানা ধরনের বুদ্ধি-পরামর্শ চেষ্টা করে দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকলে কিংবা এ নিয়ে বিব্রত হতে হতে বিষয়টা মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে থাকলে এবার স্থায়ী সমাধানের দিকে এগোন। একজন নাক-কান-গলারোগ সার্জনের কাছে যান। এখন লেজার রশ্মির মাধ্যমে নাকের ও জিহ্বার পেছনের শ্বাসনালির সংকুচিত অবস্থা দূর করার চিকিত্সা সম্ভব। স্থানীয়ভাবে চেতনানাশক ব্যবহার করে এ অপারেশন খুব বেশি সময়সাপেক্ষও নয়। তবে অবশ্যই তা হতে হবে দক্ষ অস্ত্রোপচার বিশেষজ্ঞের অধীনে।