দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর কানের রিং ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে আ. আলিম ওরফে আলিফ (২৮) নামের এক ছিনতাইকারীকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে দিয়েছে। সে দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানার পার্শ্ববর্তী নতুন হাউলী গ্রামে ওই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতুন হাউলী গ্রামের হায়াত আলীর তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ৯ বছর বয়সী শিশুকন্যা ইভা খাতুন গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ির পাশেই রাস্তার ওপর সহপাঠীদের সাথে খেলা করছিলো। এ সময় ছিনতাইকারী আলিম ওরফে আলিফ শিশু ইভাকে চকলেট দেয়ার নাম করে কাছে ডেকে নেয় এবং তার দু কানে থাকা ১ আনা ওজনের সোনার রিং জোর করে ছিনিয়ে নেয়। কান থেকে রিং ছিড়ে নেয়ার সময় শিশুকন্যা ইভা কানে প্রচণ্ড ব্যথা পায় এবং চিৎকার দিয়ে ওঠে। স্থানীয় লোকজন শিশু ইভার চিৎকারে ঘটনাস্থলে ছুটে এলে ছিনতাইকারী রিং দুটি নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। লোকজন ওই ছিনতাইকারীর পিছু ধাওয়া করে এবং পুলিশকে জানায়। দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই কাজী নাসিরুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং জনগণের সহায়তায় ওই ছিনতাইকারীকে আটক করেন। তার কাছ থেকে ছিনতাই করে নেয়া কানের রিং দুটি উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শিশু ইভার পিতা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা মাদরাসা পাড়ার আকবার আলী শিশুকন্যা বিথি (৭) পাশের বাড়ি থেকে দুধ আনতে যাওয়ার সময় চকলেট দেয়ার লোভ দেখিয়ে একই কায়দায় দু ছিনতাইকারী তার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেন ও দু কানে থাকা দুটি সোনার রিং ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে সটকে পড়ে। পরদিন অর্থাৎ গত শুক্রবার বিকেলে একইভাবে দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আশার শিশুকন্যা এশা (৮) বাড়ির সামনে শহিদুলের দোকানে যাওয়ার সময় তার কানের একটি স্বর্ণের রিং ছিঁড়ে নিয়ে ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে দেউলী গ্রামের মতিয়ার রহমানের শিশুকন্যা রুপা (৯) রাস্তার ওপর খেলা করার সময় এক ছিনতাইকারী তার কানের রিং ছিঁড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। শিশু রুপা চিৎকার দিয়ে উঠলে ওই ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলযোগে সটকে পড়ে। ছিনতাইকারী আটক হয়েছে শুনে ভুক্তভোগী দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আশা ছিনতাইকারী সনাক্ত করার জন্য তার শিশুকন্যাকে সাথে নিয়ে থানায় হাজির হন এবং ওই ছিনতাইকারীই তার রিং ছিনিয়ে নেয় বলে শিশু এশা তার পিতাকে জানায়। ছিনতাইকারী আলিফ তার নাম ঠিকানা সঠিক বলেছে কি-না এ নিয়েও জনগণের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তবে ওই ছিনতাইকারী মাস দুয়েক আগে দামুড়হুদা গুলশানপাড়ার বাসিন্দা চাল ব্যবসায়ী লিয়াকত আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্ত্রীসহ বসবাস করছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। এদিকে দামুড়হুদা সদরে একের পর এক শিশুকন্যার গলার চেন ও কানের রিং ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকমহল।