আলমডাঙ্গার কিশোর সিদ্ধিরগঞ্জের বাসা থেকে নিখোঁজের ২৮ ঘণ্টার মাথায় শীতলক্ষ্মা নদী থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার

জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার ঘোষবিলা গ্রামের কিশোর ইয়াদের (১৩) মৃতদেহ শীতলক্ষ্মা থেকে ভাসমান অবস্থঅয় উদ্ধার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজের ২৮ ঘন্টা পর গতকাল শনিবার শীতলক্ষ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা কম্পাউন্ডে নেয় পুলিশ। একমাত্র সন্তান কিশোর ইয়াদের মৃত্যুতে স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় ঘোষবিলা গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। আলমডাঙ্গা ঘোষবিলা গ্রামের খন্দকার আমিনুর রহমান ভাগ্যোন্বেষণে ছেলে ইয়াদসহ স্বস্ত্রীক নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জে ভাড়া বাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। ছেলে ইয়াদকে ভর্তি করেন সেখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ইয়াদের বাবা কনস্ট্রাকশন সাইডে ও মা শিলা খাতুন ইপিজেডে কাজ নেন। ইয়াদ ৫ম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। সে মেধাবী ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার সমাপনী মডেল টেস্ট পরীক্ষায় সে অংশ নেয়। গত শুক্রবার সকালে পড়ার টেবিলে বসেই খাবার চায় ইয়াদ। এ সময় তার মা তাকে বলেন পড়া শেষ হলে খাবার দেবো। এ সময় রাগ করে ঘর ছেড়ে বের হয়ে যায় সে। দুপুর গড়িয়ে যায় ইয়াদ ঘরে ফেরে না। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা, আসে রাত। সম্ভাব্য সকল বন্ধুদের বাসায় খুঁজে খুঁজে না পেয়ে বাবা-মা শঙ্কিত হয়ে ওঠেন। প্রতিবেশীরা প্রহর গুনতে থাকে কিশোর ইয়াদের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায়। কোথাও নেই ইয়াদ? অপেক্ষার রাত দীর্ঘ হয়। রাত পোয়ালে ফের হন্তদন্ত হয়ে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন বাবা-মা। বেলা বয়ে যেতে থাকে। অথচ কেউ দিতে পারছে না মেধাবী ছাত্র ইয়াদের কোনো খোঁজ। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইয়াদের সহপাঠী খবর দেয় শীতলক্ষ্মা নদীর এসও ঘাট গুদারাঘাটের অদূরে ভেসে আছে এক কিশোরের লাশ। পরনে ট্রাউজার ছাড়া কোনো পোশাক নেই। বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা ছুটে যায় গুদারাঘাটে। শনাক্ত করেন এ লাশ কিশোর ইয়াদের। সংশ্লিষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় খবর দেয়া হলে ওসি শরাফত উল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রহস্যজনক ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার করেন। বাবা আমিনুর ইসলাম ও মা শিলা খাতুনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই কিশোর ইয়াদের লাশ বিকেলে পরিবারের হাতে হস্তান্তর করে পুলিশ।

এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মো. শরাফত উল্লাহ জানান, সম্ভবত নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা গেছে কিশোর ইয়াদ। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে। ইয়াদের লাশ নিয়ে রাতেই আলমডাঙ্গার ঘোষবিলার উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা। আজ রোববার পারিবারিক কবরস্থানে ইয়াদের লাশ দাফন করা হবে বলে পরিবার সূত্র জানায়।