৯৫টি পুজো মণ্ডবেই থাকছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার: শারদীয় দুর্গোৎসব আসন্ন। আর মাত্র কয়েকদিন। এবারেরও শারদীয় উৎসব সুন্দর ও আনন্দঘন করে তুলতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় সর্বাধিক গুরুত্ব পায় জেলার ৯৫টি পূজামণ্ডপে বাড়তি নিরাপত্তা। ঝুঁকি বুঝে পুলিশ ও আনসার মোতায়নের বিষয়টি যেমন আলোচনায় উঠে আসে তেমনই পূজামণ্ডপ কমিটি গুলোকেও আলোক সজ্জায় বাড়তি আন্তরিক হয়ে পরিবেশকে উৎসব মুখর করে তোলার তাগিদ দেয়া হয়।

প্রস্তুতি সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুর্গাপূজা উদযাপন সম্পর্কিত সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা। উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছুফি উল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত সকলকে দুর্গাপূজা যথাযথ আনন্দ ও পবিত্রতার সাথে উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হয়। সভায় বিগত বছরগুলোর মতো এবারও সকল পূজামণ্ডপে সরকারি অনুদান সমানভাবে বণ্টন করা হবে বলে জানানো হয়। এ বিষয়ে উপস্থিত সদস্যগণ বিস্তারিত আলোচনায় অংশ নেন। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের দিন সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাথাভাঙ্গা নদীতে একটি ঘাট বেঁধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পর্যাপ্ত লাইটিঙের ব্যবস্থা করলে অনুষ্ঠানটি আরো সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে বলে প্রস্তাব করা হয়। বিসর্জনের সময় এবং পূজায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ রাখার জন্য বিদ্যুত বিভাগকে অনুরোধ করা হয়। অতীতে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা থেকে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য মাথাভাঙ্গা নদীতে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবার আরো সুন্দরভাবে ঘাট ব্যবস্থাপনাসহ লাইটিঙের ব্যবস্থার জন্য চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়রকে অনুরোধ জানানো হয়।

চুয়াডাঙ্গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহত ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা যাতে সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ প্রশাসন। ঝুঁকির মাত্রানুসারে পূজামণ্ডপসমূহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সুন্দর ও নির্বিঘ্নে পূজানুষ্ঠানের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। প্রত্যেক মণ্ডপে চৌকিদার/দফাদার ও আনসার নিয়োগ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। প্রতিমা বিসর্জনের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুর্গাপূজা উদযাপন নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলায় মনিটারিং সেল গঠন ও কন্ট্রোলরুম খোলা এবং স্থানীয় সরকারি সংস্থাসমূহ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে সফলভাবে পূজা উদযাপন বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া পূজা চলাকালীন পূজামণ্ডপে সার্বক্ষণিভাবে বিদ্যুত ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, মাগরিব ও এশার আজান এবং নামাজের সময় মাইকে পূজায় আরতি প্রচার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা, পূজামণ্ডপে সরকারি অনুদান বণ্টন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার বিষয়ে আলোচনা হয়।

উপজেলা সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতিগণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রত্যেক মণ্ডপে ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ এবং পূজা শুরুর কয়েক দিন আগে থেকে পর্যায়ক্রমে সারাক্ষণ কয়েকজন স্বোচ্ছাসেবক মণ্ডপ প্রাঙ্গণে পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়। পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর/মেম্বারগণকে পূজা উদযাপনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোলরুম খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কন্ট্রোলরুমের টেলিফোন নম্বর ০৭৬১৬২২৩১। প্রতিমা বিসর্জনের পর পূজামণ্ডপ যাতে কেউ নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, তালতলা ষষ্ঠীতলা দুর্গা মন্দির, কুলচারা দুর্গা মন্দির, বেলগাছি বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, কেদারগঞ্জ মালোপাড়া বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার দুর্গা মন্দির ও দাসপাড়া সত্য সনাতন দুর্গা মন্দিরে পূজা উদযাপিত হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া সদর উপজেলার আলুকদিয়া জয়দুর্গা শিব মন্দির, দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়া শ্রী শ্রী বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, দৌলাতড়িয়াড় হিন্দুপাড়া সার্বজনীন বারোয়ারী দুর্গা মন্দির, মোমিনপুর পূজামণ্ডপ, সরিষাডাঙ্গা পূজামণ্ডপ, সিন্দুরিয়া পূজামণ্ডপ, আলীয়ারপুর সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, বোয়ালিয়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, সরোজগঞ্জ কাছারীপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, ফুলবাড়ি সার্বজনীন পূজামন্দির, কুকিয়া চাঁদপুর শ্রী বারোয়ারী পূজামণ্ডপ, নেহালপুর শারদীয় দুর্গা পূজামণ্ডপ, গড়াইটুপি পালপাড়া পূজামণ্ডপ, গাড়াইটুপি মিস্ত্রিপাড়া পূজামণ্ডপ, তেঘরি হিন্দুপাড়া পূজামণ্ডপ, বলদিয়া দাসপাড়া পূজামণ্ডপ, খেজুরা হালদারপাড়া বরোয়ারী পূজামণ্ডপ ও ধুতুরহাট বারোয়ারী পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে।

আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার রথতলা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বাবুপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কলেজপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, স্টেশনপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ক্যানেলপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, গোবিন্দপুর দাসপাড়া শ্রী শ্রী কালী মন্দির, গোবিন্দপুর হরিতলা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড শ্রী শ্রী কালী মন্দির ও আনন্দধাম দাসপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরে পূজা উদযাপিত হবে। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলার নান্দবার শ্রী শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির, নান্দবার বাবুপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, হারদী শ্রী শ্রী আর্য মন্দির, খাসকররা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ঘোলদাড়ি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ছয়ঘরিয়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, মুন্সিগঞ্জ শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, গড়গড়ি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পুটিমারী শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, খুদিয়াখালী শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পুরাতন পাঁচলিয়া দাসপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, জামজামি শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কুলপালা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ভালাইপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, কালিদাসপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, বকশীপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, মাজু শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, ফরিদপুর শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, আঠারোখাদা দুর্গা মন্দির, হাটাবোয়ালিয়া ক্যাম্পপাড়া শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির ও কুমারী সার্বজনীন দুর্গামন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর কর্মকারপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কালিয়াবকরি শ্রীকৃষ্ণ মণ্ডপ, ছুটিপুর দাসপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কার্পাসডাঙ্গা সর্দারপাড়া পূজামণ্ডপ, চণ্ডিপুর পূজামণ্ডপ, পারকৃষ্ণপুর পূজামণ্ডপ, জয়রামপুর পূজামণ্ডপ, ডুগডুগি পূজামণ্ডপ, জয়রামপুর পূজামণ্ডপ, ছোটদুধপাতিলা পূজামণ্ডপ, দাড়ুমহুদা মাতৃ মন্দির পূজামণ্ডপ, চিৎলা পূজামণ্ডপ, পুড়াপাড়া রাধাকৃষ্ণ পূজামণ্ডপ, দামুড়হুদা দাসপাড়া পূজামণ্ডপ, গোবিন্দহুদা দাসপাড়া পূজামণ্ডপ, আমতলা সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, কেরু আনন্দ বাজার পূজামণ্ডপ, দর্শনা পুরাতন বাজার পূজামণ্ডপ, রামনগর বাগদীপাড়া পূজামণ্ডপ ও কালিদাসপুর দাসপাড়া পূজামণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে।

জীবননগর উপজেলার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির শারদীয় দুর্গা পূজামণ্ডপ, দৌলৎগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পূজামণ্ডপ, দেহাটি পালপাড়া পূজামণ্ডপ, মনোহরপুর আদিবাসীপাড়া পূজামণ্ডপ, মনোহরপুর পালপাড়া পূজামণ্ডপ, সেনেরহুদা দাসপাড়া পূজামণ্ডপ, শিয়ালমারী খিতিশ মণ্ডল সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, সিংনগর হালদারপাড়া পূজামণ্ডপ, শ্রী শ্রী অন্নপূর্ণা পূজামণ্ডপ, মনোহরপুর সার্বজনীন শ্রী কৃষ্ণ মন্দির, সুটিয়া পশ্চিমপাড়া মহাদেব পূজামণ্ডপ, শাখারিয়া দাসপাড়া শিবকালী পূজামণ্ডপ, শাখারিয়া আদিবাসী শ্রী শ্রী পূজামণ্ডপ, আন্দুলবাড়িয়া জুগিপাড়া পূজামণ্ডপ, নিশ্চিন্তপুর মালোপাড়া পূজামণ্ডপ, বাজদিয়া মিস্ত্রিপাড়া পূজামণ্ডপ, মাধবপুর কালী পূজামণ্ডপ, বকণ্ডিয়া সার্বজনীন দুর্গা পূজামণ্ডপ, রায়পুর সরদারপাড়া কালী মন্দির পূজামণ্ডপ ও রায়পুর বারুইপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।