ঝাড়ফুঁকসহ নানা ফন্দি-ফিকির : অবশেষে মৃত্যু

সর্প দংশনের স্বীকার কাঞ্চনকে কবিরাজের নিকট নিয়ে অপচিকিৎসা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার তিয়রবিলায় রান্নাঘরে খড়ি আনতে গিয়ে সর্প দংশনের স্বীকার হন কাঞ্চন খাতুন (৪০) নামের এক গৃহিণী। দংশনের পর তাকে নেয়া হয় কবিরাজের কাছে। শুরু হয় ঝাড়ফুঁকসহ নানা ফন্দি-ফিকির। অবশেষে কবিরাজ বললেন তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী কাঞ্চন খাতুন রান্নাঘরে খড়ি আনতে গেলে তাকে সাপে দংশন করে। দংশনের পর বিষের যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন তিনি। এরপর তাকে একই গ্রামের কাঙালির ছেলে কবিরাজ আজগর আলীর (৪৫) কাছে নিয়ে গেলে অনেক ঝাড়ফুঁক করেও কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে কবিরাজ তাকে বাঁচানো গেলো না বলে জানান। সেখান থেকে অবশেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, কাঞ্চন খাতুন সকালে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে খড়ি আনতে গেলে তাকে সাপে দংশন করে। বিষের যন্ত্রণায় কাতরানোর একপর্যায়ে তাকে কবিরাজ আজগর আলীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কবিরাজ গাছ-গাছড়া, কাসার থালাসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে এবং মন্ত্র পড়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। পরে কবিরাজ বলে তাকে বাঁচানো গেলো না। অবশেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকও তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, দংশনের পর যদি সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে আসা হতো তাহলে বাঁচার একটা সুযোগ ছিলো।

এদিকে তার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। তার একমাত্র ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র লালনের (৯) আহাজারিতে গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। বাদ মাগরিব নামাজের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয় বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।