কেরুজ চিনিকলের সার গোডাউনে চুরির নয়া কৌশল
দর্শনা অফিস: কেরুজ সার গোডাউন থেকে নয়া কায়দা-কৌশলে সার চুরি ফের শুরু হয়েছে। হিজলগাড়ি ফার্মের সারসহ গোডাউনে সিলগালা করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্তে বস্তায় সার কমের সত্যতা মিলেছে। এখন দেখার অপেক্ষামাত্র কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় অভিযুক্ত সার চোরদের বিরুদ্ধে। কেরুজ চিনিকলের ৭-৮টি গোডাউনে প্রতি মরসুমে হাজার হাজার বস্তা সার সরবরাহ করে থাকে মিল কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি গোডাউনের সার অভিনব কৌশলে চুরির ঘটনা বেশ পুরোনো। কয়েকবার কৃষকদের হাতে সার চুরি ধরা পড়লেও কোনো প্রতিকার হয়নি। লোক দেখানো তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নজির নেই। এ নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করে বলেছে, যে সরষে দিয়ে ভূত তাড়ানো হবে, সেই সরষেই থাকে ভূত। কৃষকদের এ অভিযোগ শেষ পর্যন্ত সত্য প্রমাণিত হলেও বহাল তবিয়তে থেকে যায় অভিযুক্তরা। এবার হয়তো প্রতিকার হতে পারে। মিল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পথেই এগোচ্ছে। কেরুজ চিনিকলের রয়েছে ১০-১২টি কৃষিফার্ম। আখের জমিতে প্রয়োগের জন্য হিজলগাড়ি কৃষি খামারে সার নেয়া হয়। খামার থেকে মিলের কমপক্ষে ১০টি ফার্মে সার বণ্টন করা হয়ে থাকে। গত বুধবার কেরুজ চিনিকলের গোডাউন থেকে ২শ বস্তা ইউরিয়া ও টিএসপি সার নেয়া হয় হিজলগাড়ি ফার্মে। সরবরাহকৃত বস্তাগুলোর প্রতিটি বস্তায় ৬-৭ কেজি করে সার কম রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরের দিন এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয় দৈনিক মাথাভাঙ্গায়। প্রতিবেদন পড়ে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। গত বৃহস্পতিবার মিলের পরীক্ষামূলক খামারের (ডিজিএম) উত্তম কুমার কুণ্ডুকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই দিনই তদন্ত কমিটি হিজলগাড়ি গোডাউন সিলগালা করে দেন। গতকাল রোববার কমিটি সদস্যরা গোডাউনের ওই সার ওজন কার্যক্রম শুরু করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ওজন কার্যক্রম শেষ করতে পারেননি কমিটির সদস্যরা। তবে ওজনের সারের বস্তায় কম পাওয়া গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
গোডাউনের ২শ বস্তা সার ওজন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করতে পারছে না। তবে কবে নাগাদ ওজন কার্যক্রম শেষ হবে তা পরিস্কারভাবে বলতে পারেননি কমিটির প্রধান উত্তম কুমার কুণ্ডু। এদিকে তদন্ত কমিটির দিকে তাকিয়ে আছে অনেকেই। এখন দেখার অপেক্ষামাত্র বরাবরের মতো এবারো কি অজ্ঞাত কারণে কোনো ফাঁক ফোঁকর দিয়ে পার পেয়ে যাবে অভিযুক্তরা?