রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ চিনিশিল্পকে বাঁচাতে সকলকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে
হারুন রাজু/হানিফ মণ্ডল: কেরুজ চিনিকলসহ দেশের সবকটি চিনিকলকে লাভজনককরণে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান গ্রহণ করেছেন নানামুখি পদক্ষেপ। কেরুজ চিনিকলের কর্মকর্তা, সিআইসি, সিডিএ, কারখানাশ্রমিক, আখচাষিদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে করেছেন মতবিনিময়। শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানকে দেয়া হয়েছে সংবর্ধনা। অনুষ্ঠিত হয়েছে গানের আসর। গতপরশু বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গাড়িবহরযোগে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের অতিথি ভবনে পৌঁছান বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন। সাথে রয়েছেন করপোরেশনের কর্মকর্তা ও ফেডারশেনর নেতৃবৃন্দ। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে তিনি অতিথি ভবনের সামনের একটি বাগানে বৃক্ষরোপণ করেন। ৯টার দিকে কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলীর দক্ষিণচাঁদপুর ছ’ডাঙ্গার মাঠের জমিতে ইক্ষুরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সাড়ে ৯টার দিকে কেরুজ চিনিকলের কারখানা পরিদর্শন করেন। পরপরই ক্যান ক্যারিয়ার চত্বরে কারখানা শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেরুজ অফিসার্স ক্লাব চত্বরে আখচাষিদের নিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কেরুজ অতিথি ভবনে মিলের কর্মকর্তা, সিআইসি, সিডিএ, ইক্ষুবিভাগের কর্মকর্তা, খামার কর্মকর্তাদের সাথে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেন। রাত ১০টার দিকে কেরুজ জেনারেল ক্লাবে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। সবকটি অনুষ্ঠানে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আখচাষিরা উন্মুক্ত আলোচনা করেন।
এ সময় করপোরেশনের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, সারাদেশের চিনিশিল্প আজ বিপর্যস্ত্র হয়ে পড়েছে। লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চিনি কারখানাগুলো। সরকারের মূল্যবান এ সম্পদ বাঁচাতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনারা যে যেখানে আছেন কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, সততা, দূরদর্শিতা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কেরুজ চিনিকলটি এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি হিসেবে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ চিনিকলটি বন্ধ হলে আলোকিত এ অঞ্চল অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে অনেকটাই। চিনিকল রক্ষায় আখচাষ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। সমৃদ্ধশীল সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করছেন নিরলসভাবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বেকারত্ম ঘোচাতে বর্তমান সরকার দেশের মৃত ও রুগ্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার করে তা সচল করেছে। সেই সাথে শিল্প কারখানাগুলো আধুনিয়কায়ন করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে শিল্প কলকারখানা। আগামীতে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আসুন সকল অনিয়ম, দুর্নীতিকে মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে একটি শিল্প সমৃদ্ধশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলি। শ্রমিক সমাবেশে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া কথা তুলে বক্তব্য দেন। আখচাষিরা আখের ন্যায্যমূল্যসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণের দাবি তোলে। সেই সাথে আখচাষিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে চিনিকলের নিজস্ব জমি লিজ না দিয়ে আখচাষ করলে চাষিরা আখচাষের ক্ষেত্রে আরো আগ্রহী হবে। পৃথক অনুষ্ঠানগুলোতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের পরিচালক (সিডিআর) আজিজুর রহমান, সচিব, কেরুজ চিনিকলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আবদার হোসেন, সিপি হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ চিনিশিল্প ফেডারেশনের সভাপতি আতিয়ার রহমান, সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম নবী। কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানগুলোতে আরো উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদ হোসেন, কেরুজ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মোস্তফা কামাল, মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মোশারফ হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) আব্দুল কুদ্দুস, মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) মিজানুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (প্রসাশন) মনোয়ার হোসেন, কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, শ্রমিকনেতা হাফিজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, রেজাউল ইসলাম, ফারুক আহম্মেদ, ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ, মোস্তাফিজুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন- শেখ শাহবুদ্দিন, আকরাম হোসেন শিকদার, জাহিদুল হক, আফিকুল ইসলাম, রতন কুমার হালদার, আলী আহসান, শফিকুল আলম, গোবিন্দ কুমার হালদার, শেখর কুমার স্যান্নাল, সাহেব আলী শিকদার, শেখ শহিদুল আলম, আ. খালেক, দারুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, বিদেশ কুমার রায়, আরাফাত হোসেন, আবুল হোসেন, মজিবর রহমান বিশ্বাস, সাজ্জাদ হোসেন, হযরত আলী প্রমুখ।