স্টাফ রিপোর্টার: পে-স্কেলে বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকরা গতকাল বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করেছেন। পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষকরা পৃথকভাবে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। একই সাথে দাবি মেনে নিতে কলেজ শিক্ষকরা সরকারকে ৮ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। শিক্ষকদের বেধে দেয়া ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে ভুল স্বীকার করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্পর্কে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করায় অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নতুন কর্মসূচির মধ্যে আছে- আগামী ১৩ ও ১৭ সেপ্টেম্বর সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব পাওয়া না গেলে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন শিক্ষকরা। অপরদিকে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাবি মেনে নেয়ার সুস্পষ্ট পদক্ষেপ না নিলে ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দেশের সব সরকারি কলেজে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। এছাড়া ১৮ অক্টোবর দাবি সংবলিত ১৫ হাজার কলেজ শিক্ষকের স্বাক্ষর শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেয়া হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক জরুরি বৈঠকে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলে রাব্বি। মহাসচিব আইকে সেলিম উল্লাহ খন্দকারসহ ঢাকায় অবস্থানরত সংগঠনের অন্য নেতারা এতে বক্তৃতা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়। লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি দিয়ে শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আগামী ১৩ ও ১৭ সেপ্টেম্বর ও দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়া ওইদিন বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব পাওয়া না গেলে লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়ার পক্ষে যখন দলমত ও শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে দেশের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে- সেখানে সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো বক্তব্য না রেখে অর্থমন্ত্রী গোঁজামিল দেয়া ৮ম বেতন কাঠামোর পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন, যা নিন্দনীয়, অগ্রহণযোগ্য ও অত্যন্ত দুঃখ জনক। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘোষিত বেতন স্কেলে প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত সব শ্রেণির শিক্ষককেই বেতন-ভাতা ও মর্যাদার দিক থেকে অবনমন করা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের বাস্তবায়ন চাই। তারা শিক্ষকদের সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান শিক্ষা আন্দোলন অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।