স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ১৩ কোটি মোবাইলফোন গ্রাহককে আবারও সিম কার্ড নিবন্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠি দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। বিটিআরসিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় তাদেরকে বলা হয়েছে, বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের নিবন্ধনের জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দিতে হবে।
গতকাল এ সংক্রান্ত আদেশে সই করার বিষয়টি জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, দু দিনের মধ্যে নতুন করে সিম কার্ডের নিবন্ধন শুরু করার চিঠিটি বিটিআরসিতে পৌঁছে যাবে। তারা সাত দিনের মধ্যে বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের বিষয়টি সম্পর্কে নির্দেশ দেবে। এরপর মোবাইল অপারেটররা মেসেজের মাধ্যমে নিবন্ধনের বিষয়টি জানতে পারবেন। এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস জানিয়েছেন, সঠিকভাবে নিবন্ধন করা মোবাইলফোন গ্রাহককে পুনরায় সিম নিবন্ধন করতে হবে না। অর্থাৎ ১৩ কোটি সিমের রি-রেজিস্ট্রেশন করা হবে না। বিটিআরসির চেয়ারম্যানের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ১৩ কোটি সিমেরই রেজিস্ট্রেশন লাগবে। এর অন্যথা হবে না। রোববারের সভায় নেয়া সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছি। এখন তাদের অন্য কোনো বক্তব্য থাকলে আমাদের জানাক। এরপর ওই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো মোবাইল সিমকার্ড বিক্রির সাথে জড়িত ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদেরও তালিকা তৈরি করতে হবে। ওই তালিকা অনুযায়ী বিক্রেতারাও নিবন্ধিত হবেন। নতুন সিম কার্ড বিক্রির ক্ষেত্রে গ্রাহক নিবন্ধনের সময় বিক্রেতার নাম-ঠিকানাও সংরক্ষণ করতে হবে অপারেটরদের। নিবন্ধনবিহীন সিমকার্ড ও ভুয়া নিবন্ধন সম্পন্ন সিমকার্ড বিক্রি বন্ধেই এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এদিকে রোববার সকালে সিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ এবং এর প্রতিকার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার নিয়ে কথা বলেন বেসরকারি মোবাইলফোন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে প্রবেশ করতে না পারার কারণে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা পোয়াতে হয়। দেখা যাচ্ছে অনেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম কার্ড কিনছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়, সহসাই জাতীয় পরিচয়পত্র তদারককারী কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে চিঠি দেয়া হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোবাইলফোন অপারেটরদের বিজ্ঞাপনেও সিম কার্ড নিবন্ধন সংক্রান্ত বার্তা প্রচার বাধ্যতামূলক করা হবে, যেমন সিগারেটের প্যাকেটে স্বাস্থ্যের ক্ষতি সম্পর্কিত সতর্কবার্তা থাকে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যমেও এ ব্যাপারে বিশেষভাবে প্রচার চালানো হবে। স্লোগান হিসেবে বলা থাকবে অনিবন্ধিত সিম ব্যবহারে বিপদ আপনার জন্য, ক্ষতিকর দেশের জন্য।