ছাত্র না পাওয়ায় বন্ধ হচ্ছে ১৬৫ কলেজ

স্টাফ রিপোর্টার: একাদশ শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থীও পায়নি ১৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থী না পাওয়ায় এসব কলেজ বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে শিক্ষামন্ত্রণালয় ও আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি সূত্র জানিয়েছে। অবশ্য ইতোমধ্যে বেশকটি কলেজ আরও এক বছর সময় চেয়ে নিজ নিজ শিক্ষাবোর্ডের কাছে আবেদন  করেছে।

এবার একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়। ৪ দফা মেধা তালিকা প্রকাশ করে ভর্তির কার্যক্রম শেষ করা হয়। এরপরও ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে উন্মুক্ত করে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। তারপরও ১৬৫টি কলেজ কোন শিক্ষার্থী পায়নি। এর মধ্যে ৮ শিক্ষাবোর্ডে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজ ৮৪টি। কারিগরিতে ৭২ আর মাদরাসা বোর্ডে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৯টি। বোর্ড সূত্র জানায়, ২৭শে জুলাই পর্যন্ত ৪র্থ মেধা তালিকা এবং সবার জন্য ভর্তি উন্মুক্ত করে পুরো আগস্ট মাস ভর্তির সুযোগ দেয় বোর্ডগুলো। কিন্তু এ সময়ের মধ্য এসব কলেজ একজন শিক্ষার্থীও পায়নি। আন্তঃবোর্ড জানায়, কিছু কলেজ তাদের এক বছর সময় দেয়ার আবেদন করেছে। বোর্ডের শর্ত অনুযায়ী এসব প্রতিষ্ঠান পূর্ববর্তী বছরে কতো শিক্ষার্থী ছিলো কতোজন পরীক্ষা দিয়েছে এবং কতোজন পাস করেছে তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়েছে আবেদনে। কলেজ অনুমোদন নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রতিটি কলেজে প্রতি শিক্ষাবর্ষে প্রতিটি বিভাগে কমপক্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। না হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ ওই কলেজের অনুমোদন বা স্বীকৃতি বাতিল করতে পারে। ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থী ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলে। যারা একজন শিক্ষার্থীও পায়নি তাদের কীভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বলবো। তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. আশফাকুস সালেহীন বলেন, এসব কলেজের পাঠদান বাতিল করার জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়েছি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আসার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রণালয় ও বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, এসব কলেজ শুধু নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করছে। এখানে পাঠদান হয় না। এজন্য কোনো শিক্ষার্থী কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করেনি। এ বছর অনলাইনে ভর্তির নিয়ম চালু করায় ভুঁইফোড় কলেজগুলোর নাম শিক্ষা প্রশাসনে চলে আসে। এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনসাধারণকে জানিয়ে দেয়ার কথাও বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য কৌশলে এমপিও ভুক্তি করা।
কলেজ অনুমোদনের সময়, শর্ত শিথিল করে অনুমোদন দেয়ার কারণেই কলেজের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। মফস্বল এলাকায় ৬ কিলোমিটার ও পৌর এলাকায় ২ কিলোমিটার পর পর কলেজের অবস্থান থাকার কথা থাকলেও বোর্ড তা যাচাইবাছাই না করে অনুমতি দিচ্ছে। অন্যদিকে ৭৫ হাজার জনসংখ্যার জন্য একটি কলেজের অনুমোদন দেয়া যাবে এমন শর্ত আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। অথচ বোর্ডগুলো শর্ত শিথিল করে হরহামেশাই অনুমোদন দেয়। রাজনৈতিক চাপও এখানে কাজ করছে।

 

Leave a comment