বাংলাদেশে সহজে ক্যান্সার নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবন

 

স্টাফ রিপোর্টার: ক্যান্সার নির্ণয়ে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ রেখেছেন বাংলাদেশের গবেষকরা। তারা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যা বিশ্বজুড়ে চিকিত্সকদের অবাক করে দিয়েছে। অত্যন্ত সহজ পদ্ধতি এবং খুব কম খরচে তারা ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ে ইলাস্টোগ্রাফির এ পন্থাটি চিকিত্সকদের অবাক করেছে। স্বনামধন্য চিকিত্সকরা বলছেন, এটা কার্যকর এবং তাদের পুরনো ধারণাকে বদলাতে তারা দ্বিধা করছেন না। প্রাথমিকভাবে স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ে প্রচলিত পদ্ধতির চাইতে অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন একদল বিজ্ঞানী। সরকারি অর্থায়নে দু বছরের গবেষণায় এই আবিষ্কার করেছেন তারা। ইলাস্টোগ্রাফি বিশ্বজুড়ে নতুন রোগ নির্ণয় পদ্ধতি হিসাবে উঠে আসছে। এই ইলাস্টোগ্রাফিকে ব্যবহার করে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার নির্ণয়ে সাফল্য পেয়েছেন তারা। বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যান্সার নারীদের এক নীরব ঘাতক। বিশ্বব্যাপি ক্যান্সারে নারী মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয় স্তন ক্যান্সারে। বাংলাদেশে নারীর মুত্যুর প্রধান পাঁচটি কারণের মধ্যে একটি স্তন ক্যান্সার।

তবে এ গবেষণা দলের মূল ব্যক্তির নাম শুনলে সবাই হোঁচট খাবেন। তিনি কিন্তু কোনো চিকিত্সক নন। তিনি একজন প্রকৌশলী। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একজন অধ্যাপক। নাম মো. কামরুল হাসান।

আমি প্রকৌশলী বলে প্রথমে সবাই একটু ভুরু কুঁচকিয়েছিলো। নিজেদের আবিষ্কারের কাহিনী বর্ণনা করছিলেন ড. মো. কামরুল হাসান। আমাদের প্রজেক্ট যখন সম্পন্ন হলো তখন প্রথম যে রোগী এলেন তিনি একজন স্বনামধন্য চিকিত্সকের আত্মীয়া। স্তনের আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখে যে চিকিত্সকরা প্রথমে টিবি হিসাবে ধারণা করেছিলেন। অন্য চিকিত্সকরা রিপোর্ট দেখে বললেন, তিন সপ্তার ওষুধ দিয়ে দিন ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু সেই স্বনামধন্য চিকিত্সক আমাদের প্রজেক্টের কথা জানতেন, তিনি আমাদের কাছে পাঠালেন। আমরা পরীক্ষা করে বললাম এটা টিউমার, ম্যালিগন্যান্ট। কিন্তু আমাদের কথাকে কেউ পাত্তা দিলেন না।

তিনি বললেন, ইঞ্জিনিয়াররা ডাক্তারির কী বোঝেন? বলে মিটমিট করে হাসলেন অধ্যাপক। বললেন, আমরা আসলে ডাক্তারি করছি না, আমাদের আবিষ্কারটা সিম্পল ফিজিক্স। পরে সেই রোগীকে অপারেশনের আগে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় বায়োপসির ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের রিপোর্ট ঠিক ছিলো। আলট্রাসনোগ্রাম ও ম্যামোগ্রাফির রিপোর্ট পরিষ্কার তথ্য দেয়নি। কিন্ত আমাদের ইলাস্টোগ্রাফি খুব ভালো তথ্য দিচ্ছে। শুধু তাই না, ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয়ের এখন সবচেয়ে ভালো পরীক্ষা হচ্ছে ম্যামোগ্রাফি। এ ম্যামোগ্রাফিতে ৪৫ বছরের বেশি কোনো নারীর প্রাথমিক পর্যায়ের টিউমার থাকলে তা নির্ণয় সম্ভব। কিন্তু অল্প বয়সের কোনো নারীর সেটা সম্ভব হবে না। কিন্তু ইলাস্টোগ্রাফিতে এটা আমরা ১৩ বছর বয়সী মেয়ের শরীরেও টিউমার শনাক্ত করতে পেরেছি।