ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ এখনো সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে অনেক বেশি। চড়ামূল্যের কারণে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রত্যাশিত গতিতে যে বাড়ছে না তা বলাই বাহূল্য। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রী ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাসের তাগিদ দিয়েছেন। এ তাগিদের পর সেপ্টেম্বর মাস থেকে ব্যান্ডউইথের দাম কমানো হয়েছে। যদিও ব্যাণ্ডউইথের মূল্যহ্রাসের সুফল সাধারণ ব্যকবহারকারীরা পাচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, বিটিসিএল’র যাবতীয় সরঞ্জামাদি থাকা সত্ত্বেও চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অনেক জেলাতেই বিটিসিএল’র ব্রডব্যান্ড চালু করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই বিটিআরসি’র স্থানীয় প্রকৌশলীরা বলে আসছেন, কাজ চলছে। কবে নাগাদ এ কাজ সম্পন্ন হবে? কবে নাগাদ চুয়াডাঙ্গায় বিটিসিএল’র ব্রডব্যান্ড সংযোগ গ্রাহকদের মাঝে দেয়া শুরু হবে? এসব প্রশ্নের জবাব মিলছে না।
পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ১ হাজার ৬৮ টাকা থেকে কমিয়ে ৬ শ ২৫ টাকা করা হয়েছে। তবে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে, ন্যূনতম ১০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ কিনলে এ মূল্য পাওয়া যাবে। এ হ্রাসকৃত মূল্য কেবল ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে কার্যকর হবে। কিন্তু ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) বা মোবাইল অপারেটরগুলোর কেউই এ কম দামের সুফল গ্রাহককে দিতে পারছে না। অপরদিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর দুর্বল ভূমিকার কারণেই গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম যেমন কমছে না, তেমনই সর্বস্তরে চাহিদামতো সংযোগও দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গায় ব্রডব্রান্ড সংযোগ না পাওয়া তারই অংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার মতেই বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি। এ বিপুলসংখ্যক গ্রাহক যাতে ন্যায্যমূল্যে ইন্টারনেটসেবা পায় সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্বও বিটিআরসির।
একই সাথে প্রত্যাশিত গতির সংযোগের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটির আচরণে সন্তোষ্ট নন গ্রাহকরা। ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আশাব্যঞ্জক ভূমিকা রাখতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। মনে রাখতে হবে তথ্য প্রযুক্তির সেবা জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য বর্তমান সরকারের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সেটি তখনই বাস্তবায়ন সম্ভব হবে যখন সেবার মূল্য ব্যবহারকারীর নাগালের মধ্যে নেয়ার পাশাপাশি দ্রুতগতির সংযোগ সর্বক্ষেত্রে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে।