বার্ষিক আয় প্রায় ১৩ লাখ টাকা : নামকাওয়াস্তে বেতনে পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা
দর্শনা অফিস: ১৯৯০ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগীদের উদ্যোগে শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয় দর্শনা অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়। সরকারি খাসজমি লিজ গ্রহণের মাধ্যমে দর্শনা রেলবাজারে এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও আজ পর্যন্ত নিজস্ব জমির ব্যবস্থা হয়নি। বিদ্যালয়ের বার্ষিক আয়ের পরিমাণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদানের অংক কম না থাকলেও নিজস্ব সম্পত্তি কেনার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। এমপি আলী আজগার টগর ও কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। অভিভাবকদের কাছ থেকে বছরে ৬ বার পরীক্ষার নামে নেয়া হচ্ছে ফিস। এছাড়া রয়েছে মোটা অংকের মাসিক বেতন। এ বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে অনেকটাই হিমসিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা।
জানা গেছে, দর্শনা অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে অভিভাবকরা ঝুঁকে পড়ছেন। এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নার্সারি থেকে ৫শ শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪শ জন। ৪শ শিক্ষার্থীর জন্য পাঠদানের জন্য শিক্ষকের সংখ্যা ১২-১৩ জন। পাঠদান দিতে গিয়ে শিক্ষকদের অনেকটাই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। অভিভাবকদের অভিযোগে জানা গেছে, অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে প্রয়োজন কমপক্ষে ১ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিবছর ভর্তিতো বাধ্যতামূলক। মাসিক বেতন গুনতে হয় ২শ টাকা। পরীক্ষার ফি দিতে হয় বছরে ৬ বার। প্রতিবার ফিস গুনতে হয় ১শ থেকে ১১০ টাকা। এর বাইরেও রয়েছে অন্য খরচ। হিসেব মতে, প্রতিবছর পরীক্ষার ফিস বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা এবং বেতন বাবদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা। ফলে বার্ষিক আয় দাড়ায় ১২ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তির অনুদান অব্যাহত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১২-১৩ জন শিক্ষক ও অন্য কর্মচারী রয়েছেন ২-৩ জন। নামকাওয়াস্তে বেতনে চাকরি করছেন শিক্ষকরা। নতুন শিক্ষকদের দেড় থেকে দু হাজার টাকা বেতন হলেও পুরোনো শিক্ষকদের হাজার তিনেক টাকা বেতনে গিয়ে দাড়ায়। সব মিলিয়ে শিক্ষক ও স্টাফের মাসিক বেতনসহ অন্যখাতে আনুমানিক ৭ লাখ টাকা বেতন বাবদ ব্যয় হয়ে থাকে। হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৫ লাখ টাকা বার্ষিক আয় হচ্ছে বিদ্যালয়টিতে। একাধিকবার শিক্ষকরা বেতন বাড়ানোর জন্য অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করলেও ফলাফল শূন্য। তবে এ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের তহবিলে কতো টাকা জমেছে তা কেউ জানেন না। আসলে কি তহবিলে টাকা আছে নাকি নেই তা শুধুই জানেন অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান।
এ বিষয়ে হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দিতে রাজি ছিলেন না। আসলে খতিয়ে দেখা দরকার, দর্শনার প্রাণকেন্দ্রে এ বিদ্যালয়টি কি নিজের মতো করেই পরিচালনা করছেন অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান? এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তাদের দৃষ্টি কামনা করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষক ও অভিভাবকমহল।