গণমনস্তাত্ত্বিকতায় অসুস্থতা : পুষ্টিহীনতা ও সচেতনতা

 

গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে অসুস্থ হয়ে মেহেরপুর সদর উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বিদ্যালয়ে পাঠদান চলার সময় রোববার বেলা ১১টার দিকে আকস্মিক এ ঘটনা ঘটে। এর আগে চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গার জামজামির ঘোষবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের কয়েকটি বিদ্যালয়ে অভিন্ন রোগে শিশুশিক্ষার্থীদের অনেকেই বিদ্যালয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।

চিকিৎসকদের মতে, এ রোগে একজন অসুস্থ হলে তার দেখাদেখি অন্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেহেরপুরসহ অন্য এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণিকক্ষে পঠনপাঠনের সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। এ রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু না থাকলেও এক শ্রেণির ওঝা-কবিরাজরা যে গুজব ছড়িয়ে স্বার্থসিদ্ধীর অপচেষ্টায় মেতে ওঠে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না।

গণহিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর নতুন কিছু নয়। এ রোগে সাধারণভাবে মেয়েদেরই বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই যে এটা ঘটে তাও নয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেহেতু এক সাথে বেশি সংখ্যায় শিক্ষার্থী থাকে এবং আক্রান্ত হয়, সেহেতু সংবাদ মাধ্যমে তা গুরুত্ব পেয়ে থাকে। এ রোগ তেমন মারাত্মক নয় বলে চিকিৎসক বা জনসাধারণের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। চিত্তের দুর্বলতার সাথে সাথে পুষ্টিহীনতাসহ নানা কারণে শারীরিক দুর্বলতার সম্পর্ক রয়েছে। যার সাথে রয়েছে আক্রান্তের পারিবারিক অর্থনৈতিক সামর্থ্যের প্রশ্ন। অন্যান্য সামাজিক ও পারিবারিক সঙ্কটও ওইসব অল্প বয়সী শিক্ষার্থীদের মানসিক দুর্বলতার কারণ হতে পারে না, তা নয়।

গণহিস্টিরিয়া সম্পর্কে যেমন জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে, তেমনই পুষ্টিহীনতা কাটিয়ে তোলার বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নিতে হবে। শিশুদের পুষ্টিহীনতা কাটিয়ে তুলতে না পারলে সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন অসম্ভব। ফলে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থান গড়ে তোলার পাশাপাশি শিশুদের পুষ্টিহীনতা কাটিয়ে উঠতে পুষ্টিকর খাবার সরবরাহের বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিতে হবে।