আলমডাঙ্গার খাসকররা-হরিনাকুণ্ডু সড়কে শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধুতে যাত্রী তোলা নিয়ে বিরোধ
স্টাফ রিপোর্টার: মীমাংসার জন্য ক্যাম্পে ডেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ একই পরিবারের তিনজকে বেধড়ক মারপিঠ করেছেন আলমডাঙ্গার খাসকররা পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই নজরুল ইসলাম। তাদের নামে মামলা দিতে থানায় প্রেরণ করা হলেও জনরোষের মুখে পিছু হটেছেন নজরুল। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি এলাকাবাসীর কাছে মাফ চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করলেও এলাকায় বইছে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ। পুলিশের হাতে মারধরের শিকার ব্যক্তিরা হলেন- খাসকরার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুকুরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক ও মন্টু মিয়া এবং মন্টু মিয়ার ছেলে রুবেল হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার খাসকররা-হরিনাকুণ্ডু সড়কে শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধু চালান মন্টু ও তার ছেলে রুবেল। আব্দুর রাজ্জাক খাসকররা বাজারে আলমসাধু স্ট্যান্ডের স্টাটার। গত শনিবার ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার আমেরচারা স্ট্যান্ডে আলমসাধুতে যাত্রী ওঠানো নিয়ে স্থানীয় আলমসাধুচালকদের হাতে প্রহৃত হন রুবেল। বাড়ি ফিরে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। গতকাল সকালে ওই এলাকার আলমসাধুচালকরা খাসকররায় আসলে রুবেলসহ তার লোকজন জড়ো হয়ে মারধরে উদ্যত হন। খবর পেয়ে খাসকররা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এএসআই নজরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রুবেলসহ কয়েকজনকে আটক করেন। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবলুর রহমান মীমংসার কথা বললে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক পুলিশকে উদ্দেশ্যে করে বিরূপ মন্তব্য পোষণ করেন। এতে রাগান্বিত হন এএসআই নজরুল।
এদিকে বিকেলে উভয় পক্ষের লোকজনকে নিয়ে নজরুলের কথামতো ক্যাম্পে পৌছান ইউপি সদস্য বাবলুর রহমান ও বাজার কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি। কিন্তু সালিস করার আগেই তাদের সামনে রাজ্জাক, মন্টু ও রুবেলকে বেধড়ক মারপিট করেন এএসআই নজরুল ইসলাম। সালিস না করে তাদেরকে ক্যাম্পে আটকে রাখা হলে নেতৃবৃন্দ ক্যাম্পে ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। ওই তিনজনকে মারধরের ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনজনকে থানার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন এএসআই নজরুল। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার উপক্রম হয় এবং জনরোষ বাড়তে থাকে। বিষয়টি টের পেয়ে তিনজনকে মাঝপথ থেকে ক্যাম্পে ফিরিয়ে নিয়ে আবারো মীমাংসার প্রস্তাব দেন নজরুল। সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য, বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দসহ অনেকের সামনেই নিজের কৃতকর্ম স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন নজরুল ইসলাম। তবে মারধরে আহত তিন ব্যক্তি পুলিশের চাপে পড়ে ক্ষমা করার কথা বললেও তারা ক্ষোভের আগুনে পুড়ছেন। স্থানীয় মানুষের মাঝেও বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। সলিসের জন্য ডেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে নিরপরাধ তিনজনকে পেটানোর জন্য এএসআই নজরুলের অপসারণ দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি পুলিশ সুপার খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, কাউকে পেটানো হয়নি।