শিশুসন্তানকে উদ্ধার করতে না পেরে পিতা পলাশপাড়ার ফেলু শেখ দিশেহারা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র সাব্বিরকে উদ্ধার করতে না পেরে তার পিতা পলাশপাড়ার ফেলু শেখ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে অপহৃত সাব্বির ওরফে সাকিবের সৎ মা হানিফাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করেছেন স্থানীয় অনেকে। পুলিশ আন্তরিক হলে শিশু সাব্বির অপহরণ রহস্যের জট খুলবে বলেও আশাবাদ এলাকাবাসীর।
৮ দিনে শিশু সব্বিরকে উদ্ধার করতে না পারায় তার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে তা নিয়েও নানা সন্দেহ ঘনীভূত হয়ে উঠেছে। মোবাইলফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা জনৈক সামাদকে ধরতে পারেনি পুলিশ। তাকে ধরতে পুলিশের তেমন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
গত ২০ আগস্ট বিদ্যালয়ের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় সাব্বির। এরপর থেকেই নিখোঁজ সে। তার পিতা পরদিন থানায় নিখোঁজ ডাইরি করেন। পত্রিকায় দেন নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি। এ ঘটনার তিন দিনের মাথায় ২৪ আগস্ট অজ্ঞাতস্থান থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি নিজেকে সামাদ বলে পরিচয় দিয়ে শিশু সাব্বিরের মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকা দাবি করার ধরনও সন্দেহজনক।
জানা গেছে, সাব্বিরের বয়স যখন দেড় বছর তখন তাকে রেখে তার মা ফিরে যায় পিতার বাড়ি মাগুরা শালিকা থানার শতখালী গ্রামে। এদিকে শিশু সাব্বির তার পিতার কাছে থেকেই বড় হতে থাকে। ওর বয়স যখন সাড়ে ৪ বছর তখন তার পিতা রঙমিস্ত্রি ফেলু শেখ বুজরুকগড়গড়ির হানিফার সাথে বিয়ে করে। হানিফার কোলে আসে কন্যাসন্তান। প্রতিবেশীসূত্র বলেছে, শিশু সাব্বিরের সাথে তার সৎ মা সন্তোষজনক আচরণ করতো না। এ কারণে গত রোজার আগে সাব্বিরের পিতা তার বর্তমান স্ত্রী হানিফাকে মারধর করে। হানিফা বাড়ি ছেড়ে টানা ২৫দিন অজ্ঞাতস্থানে অবস্থান করে। ঈদের আগে বাড়ি ফেরে। এরপরই ঘটলো সাব্বির অপহরণের ঘটনা।
যেহেতু সাব্বিরের পিতা দরিদ্র, সেহেতু সাব্বিরকে পেশাদার অপহরকচক্র তাকে অপহরণ করেনি বলেই অনেকের অনুমান। তাহলে কি নিকটজনদের কেউ তাকে অপহরণ করে ঘটনা অন্য দিকে ঘোরানোর জন্যই মুক্তিপণ দাবির নাটক করা হচ্ছে? এসব প্রশ্ন স্থানীয়দের মাঝে দানা বেধেছে। সাব্বিরকে দ্রুত উদ্ধার করে অপহরণের প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছেন মহল্লার অনেকে।