স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার শহরের হাসপাতালপাড়ার ভাড়াবাসা থেকে পুলিশ রুম্পা পারভীন নামে (২৬) এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সদর থানা পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করলেও মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। রুম্পার স্বামী রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা প্রবাসী। রুম্পা এবার মাস্টার্স পরীক্ষার্থী ছিলো।
পুলিশ জানায়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের আসান্নুর বিশ্বাসের মেয়ে রুম্পা পারভীনের সাথে সাত বছর আগে যশোর মনিরামপুর গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী রফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। তিন মাস আগে রুম্পা চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালপাড়ায় রেজাউল হকের তিনতলা বাড়ির দোতলায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এ বাসায় রুম্পার মা ও খালাতো ভাই সাথে থাকতো। গত মঙ্গলবার রুম্পার খালাতো ভাই ও মা দুজনেই গ্রামের বাড়ি ইব্রাহিমপুর চলে যান। রুম্পা গতপরশু রাতে একাই ছিলো বলে তার নিকটজনেরা জানান। গত মঙ্গলবার রাতে রুম্পার চাচাশ্বশুর মারা যায়। এ খবর দেয়ার জন্য গতকাল বুধবার সকালে মোবাইলফোন করতে থাকেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মোবাইলফোন রিসিভ না করায় রুম্পার মায়ের নিকট ফোন করেন। রুম্পার মা তার মেয়ের মোবাইলফোনে না পেয়ে বাড়ির মালিকের স্ত্রীর নিকট ফোন করেন। এরপরই বাড়ির মালিকের স্ত্রী দুলী বেগম দোতলায় গিয়ে রুম্পাকে ডাকতে শুরু করেন। তিনি জানান, ডেকে সাড়া না পেয়ে দেখি রুম্পার একমাত্র ছেলে তিন বছর বয়সী রাদিব একটি ঘরে বসে একা একা খেলছে। পাশের ঘরের বারান্দায় গিয়ে জানালা দিয়ে দেখি গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো লাশ। লাশের পা খাটের সাথে ঠেকে। ভেতর থেকে দরজা আটকানো। খবর দেয়া হয় পুলিশে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন বছর বয়সী রাজিব নামে এক পুত্র সন্তান রয়েছে। আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো ঘটনা তা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি। নিহতের স্বামী বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছেন। রুম্পার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে নানামুখি গুঞ্জন রয়েছে। স্থানীয়দের কেউ কেউ মৃত্যুর আড়ালে পরিকিয়া আছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখারও দাবি তোলে। অবশ্য রুম্পার মাসহ নিকটজনেরা এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই দাবি করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লিয়াকত হোসেন জানান, ওড়না গলায় পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে নেয়। গতকালই ময়নাতদন্ত শেষে পিতার গ্রাম ইব্রাহিমপুরে দাফন করার প্রক্রিয়া করা হয়।