চুয়াডাঙ্গায় পৃথক স্থানে একই রাতে পৃথক তিন গ্রামে এক নারীসহ তিনজনের সাপে দংশন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন গ্রামে যেমন বেড়েছে সাপের উপদ্রব, তেমনই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এন্টিস্নেক ভেনমের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গতপরশু রাতে পৃথক তিন গ্রামের তিনজনকে সাপে দংশন করলে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনজনকেই রেফার করা হয়। দুজনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হলেও দরিদ্র এক রোগীকে নিতে না পেরে কবিরাজের অপচিকিৎসার শিকার হতে হয়েছে। অবশ্য পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আরো একজনকে সাপে দংশন করলেও বিষ প্রয়োগ না করায় তাকে হাসাতালে পর্যবেক্ষণ শেষে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গতপরশু রোববার রাত ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের হাতিকাটার বদর উদ্দীনের ছেলে জহুরুল ইসলামকে (২৮) সাপে দংশন করে। তাকে উদ্ধার করে নেয়া হয় সদর হাসপাতালে। একই রাতে প্রায় একই সময়ে সাপে দংশন করে দামুড়হুদার কলাবাড়ি রামনগরের নূর উদ্দীন সেতুর স্ত্রী জেবা খাতুনকে। তাকেও নেয়া হয় সদর হাসপাতালে। এদিকে পরশু রাতে সর্প দংশনের শিকার হন চুয়াডাঙ্গা বেলগাছি ঈদগাপাড়ার মৃত বাদল বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৬৭)। তাকেও হাসপাতালে নেয়া হয়। সাপে কাটা তিনজন রোগী, অথচ হাসপাতালে এন্টিস্নেক ভেনম সাকুল্লে ২০ অ্যাম্পুল। কাকে থুয়ে কাকে দেবে? কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. সউদ কবীর জন তিন রোগীকেই রেফার করেন। জহুরুল ও জেবা খাতুনকে ঝিনাইদহে নেয়া হলেও শহিদুল ইসলামকে হাসপাতালেই রাখেন তার নিকটজনেরা। রাতে চিকিৎসা শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে শহিদুল ইসলামকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে বেলগাছির সেই কবিরাজের নিকট নেয়া হয়। কবিরাজ অবশ্য ভোররাতে চিকিৎসা না দিয়ে সংবাদপত্র ও পুলিশের অজুহাতে রোগী ফিরিয়ে দেন। রোগীকে পুনরায় হাসপাতালে নেয়া হলে ফের চিকিৎসা শুরু হয়। অবাক হলেও সত্য যে, সকালে ওই কবিরাজের নিকট নেয় হয় ফের। সেখানে চলে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা। এক পর্যায়ে রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফের নেয়া হয় হাসপাতালে। পুনরায় এন্টিস্নেক ভেনম দেয়া শুরু হয়। চিকিৎসকেরা বলেন, এভাবে কি রোগীকে সুস্থ করা যায়? এছাড়া গতকাল সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়ার রমজান আলীর ছেলে আক্তারকে সাপে কাটে। তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। শুরু হয় পর্যবেক্ষণ। সাপে কাটা দাগ মিললেও পর্যবেক্ষণে বিষক্রিয়ার লক্ষ্যণ দেখা না দিলে চিকিৎসক জানান, সাপে কাটলেও বিষপ্রয়োগ করেনি। ফলে এন্টিস্নেক ভেনম প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। দিনভর হাসপাতালে রাখার পর সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।
সাপের উপদ্রব সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এলাকার প্রবীণদের অনেকেই বলেছেন, বৃষ্টির পানিতে খাল-বিল, পুকুর-নালা যেমন টইটুম্বর, তেমনই ভ্যাপসা গরম। এ কারণেই সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। এ সময় সাপের উপদ্রব খুব অস্বাভাবিক নয়। অথচ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর একমাত্র চিকিৎসা এন্টিস্নেক ভেনম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের সিভিল সার্জন অবশ্য বলেছেন, এবার সাপে কাটা রোগী বেশি। এ কারণে শেষ হয়ে গেছে। চাহিদা দেয়া হয়েছে। দু একদিনের মধ্যেই হাসাতালে এন্টিস্নেক ভেনম পৌছে যাবে বলে আশা করছি।