মাথাভাঙ্গা মনিটর: জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোটদানের জন্য নিবন্ধিত হচ্ছেন সৌদি আরবের নারীরা। শুধু ভোটার হিসেবে নয়, অধিকারের আওতা আরও একটু বাড়ছে নারীদের। এবারের নির্বাচনে তারা প্রার্থীও হতে পারবেন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে দেশটির পৌরসভা নির্বাচন। দেশজুড়ে একই দিনে এ নির্বাচন হয়। এ কারণে এ নির্বাচনকে সেখানে জাতীয় নির্বাচন বলা হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নারীদের ভোটাধিকার পাওয়ার ঘটনাটিকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সমাজ গঠনের প্রক্রিয়ায় একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় সৌদি আরবের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে দেশটিতে রাজতন্ত্র থাকায় দল গঠনের সুযোগ পাবেন না কেউ। সংবাদ মাধ্যম সৌদি গেজেট জানায়, মদিনা এবং মক্কায় রোববার নির্বাচনী অফিসের উদ্বোধন করার পর জামাল আল-সাদী এবং সাফিনাজ আবু আল-শামাত নামের দু নারী শহর দুটিতে ভোটার হিসেবে প্রথম নিবন্ধিত হন। ভোটারদের নিবন্ধনের কাজ ২১ দিন চলবে।
এবারের নির্বাচনে প্রায় ৭০ নারীপ্রার্থী লড়বেন। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন ম্যানেজার হিসেবে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ৮০ নারীর। সাফিনাজ আবু আল-শামাত জানান, প্রথম নারী হিসেবে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়ার সংকল্প ছিলো তার। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ নারীদের জাতীয় দায়িত্ব। ২০১১ সালে পৌরসভা নির্বাচনের সময় তৎকালীন বাদশা আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ ঘোষণা করেন, শরিয়াহ মোতাবেক নারীদের অধিকার রক্ষা করা হবে, তারা ভোট দিতে পারবেন। এমনকি নির্বাচনে প্রার্থীও হতে পারবেন। ২০১১ সালের পর এই প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে বাদশার ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কর্মীরা এ উদ্যোগকে এক ধরনের অগ্রগতি উল্লেখ করলেও নারীদের সমানাধিকার পেতে আরও অনেক দূর যেতে হবে বলে জানান।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কারেন মিডেলটন এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সৌদি আরবে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার পথে একে একটি ক্ষুদ্র অর্জন বলে মন্তব্য করেন। সৌদি সমাজে নারীদের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের এখানে গাড়ি চালানোর অধিকার নেই। ভ্রমণে, আর্থিক কাজে অথবা উচ্চশিক্ষায় কিংবা বিবাহের ক্ষেত্রে এখনও তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হয়। ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচন বিষয়ক এক কর্মশালায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারীর একজন হাইফা-আল-হাবাবি (৩৬) বলেন, আমি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিতে প্রচারাভিযান চালাব। তিনি আরও বলেন, এতদিন ধরে চলে আসা ধারার পরিবর্তন করতে হবে। পরিবর্তনই জীবন। সরকার আমাদের এ সুবিধা দিয়েছে এবং আমি এর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছি।