বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে ফেলা যাবে না : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারলেও তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে কোনোদিন মুছে ফেলা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ চিরজাগ্রত। স্বাধীন বাংলার স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বিকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত চিত্রগাঁথায় শোকগাথা শীর্ষক ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকেই হারাইনি, যে চেতনার মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল এ হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেই চেতনাকেও ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পরেই সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে দেয়া হয়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও বিকৃত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়া যেত না। মুক্তিযুদ্ধের নাম নেয়া যেত না। তিনি বলেন, কারও আপনজন হারালে, খুন হলে মানুষ বিচার চায়। কিন্তু কি দুর্ভাগ্য আমাদের বিচার চাইবার অধিকারটুকুও তখন ছিল না। সেই অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়া হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতিকে শোষণ বঞ্চনা থেকে মুক্ত করা। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়া। দেশ এখন বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ একদিন উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে বসবে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। যত চড়াই, উৎরাই, বাধা-বিঘ্ন আসুক না কেনো এ জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবির প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি জাতিকে গড়ে তুলতে হলে জাতির গৌরবের ইতিহাস জানতে দিতে হবে। এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী, শিশুকিশোররা স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য জাতির ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা জানতে পারবে। মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি (ভাইস চ্যান্সেলর) অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করে শোনান সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। হজযাত্রীদের সাথে প্রতারণাকারীদের কঠোর শাস্তি হজযাত্রীদের সাথে যারা প্রতারণা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, হজযাত্রীদের সাথ কেউ যেন প্রতারণা করতে না পারে সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কেউ প্রতারণা করলে তাদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে। রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে হজযাত্রীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও হজ কার্যক্রম ২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। এসময় তিনি হজ গমনেচ্ছুদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। হজযাত্রীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, পবিত্র জায়গায় যাচ্ছেন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আপনারা দোয়া করবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। আমি যেন দেশের মানুষের কল্যাণ করতে পারি। যে গুরুদায়িত্ব আমি পেয়েছি তা যেন যথাযথভাবে পালন করতে পারি। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, এখানে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতনের মতো কোন অপরাধের স্থান নেই। তারপরও এসব ঘটনা ঘটে। সরকার মানুষকে এসব বিষয়ে সচেতন করার কাজ করছে, বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই ইসলামের সেবা করেছে। তিনি বলেন, অতীতে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। আমরা চাই সবাই স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে। সরকার গঠনের পর থেকে হজযাত্রীদের সব সমস্যা সমাধানের জন্য বর্তমান সরকার আন্তরিক চেষ্টা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, হজ কার্যক্রম সহজ ও ডিজিটালাইজড করে হজ কার্যক্রম আরও সহজতর করা হবে। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সংসদ সদস্য সাহারা খাতুন প্রমুখ।

Leave a comment