কিপিং ছেড়ে দেয়া ছিলো সেরা ঘটনা: সাঙ্গাকারা

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আর মাত্র দুটি টেস্ট খেলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন সাঙ্গাকারা। বিদায় বেলায় লঙ্কান গ্রেট তার ক্যারিয়ারের দিকে ফিরে তাকিয়ে জানিয়েছেন, কিপিং ছেড়ে দেয়া ছিলো এর মধ্যে সেরা ঘটনা। আজ থেকে শুরু হচ্ছে ভারত-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজ। গত ২৭ জুন সাঙ্গাকারা ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন, এ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শেষেই বিদায় জানাবেন ক্রিকেটকে।

বিদায়ের আবহের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার গলে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন সাঙ্গাকারা। নানা প্রসঙ্গে তিনি ফিরে গেলেন তার গৌরবময় ক্যারিয়ারের নানা অলিগলিতে। জানালেন, কিপিং থেকে মুক্ত হয়েছিলেন বলেই নামের পাশে এখন এতো এতো রান ও সেঞ্চুরি।

আমাকে যখন কিপিং ছাড়তে বলা হয়েছিলো, আমার একটুও ভালো লাগেনি। কিন্তু নির্বাচক কমিটি আমাকে এসে বললো, আমরা চাই তোমার ব্যাটিং আরও ভালো হোক, তুমি আরও বেশি রান করো। এ জন্যই তোমাকে কিপিং ছাড়তে বলছি। এতে তোমার ও দলের ভালো হবে। তখন আমার মনে হয়েছিলো, এটা মোটেও ঠিক না, আমি দুটোই একসাথে করতে পারি। এখন পেছন ফিরে তাকিয়ে যখন দেখি, ওটা ছিলো আমার ক্যারিয়ারের সেরা ঘটনা।

উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবেই ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেক সাঙ্গাকারার। দ্বৈত ভূমিকায় খারাপও করছিলেন না। কিন্তু নির্বাচকেরা ব্যাট হাতে আরও উজ্জ্বল সম্ভাবনার ছবি দেখেছিলেন সাঙ্গাকারার মাঝে। ২০০৬ সালে অশান্ত ডি মেলের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি তাই সাঙ্গাকারাকে কিপিং ছাড়তে বাধ্য করেছিলো। ব্যাটিং অর্ডারেও নিয়মিতভাবে তাকে ৩ নম্বরে তুলে এনেছিলো তারা।

সেই পালাবদল সাঙ্গাকারার ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ২০০৬ সালের ইংল্যান্ড সফরের পর কিপিং ছাড়ার ওই সিদ্ধান্ত। ততোদিনে ৬০ টেস্ট খেলা হয়ে গেছে সাঙ্গাকারার, করেছেন ৯ সেঞ্চুরি, ব্যাটিং গড় ছিলো ৪৬.৯০। আর কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা ৪৭ টেস্টে ব্যাটিং গড় ছিলো ৪১.২৪; আর কিপিং গ্লাভস না পরে খেলা ১৩ টেস্টে গড় ছিলো ৬৮.১৫। নির্বাচকেরা নিজেদের করণীয় বুঝে ফেলেছিলেন।

৪৭ ছুঁইছুঁই গড়ও যথেষ্ট ভালো। কিন্ত নির্বাচকেরা তার মাঝে দেখেছিলেন গ্রেট হয়ে ওঠার ছবি। অনেকটা জোর করেই তাই কেড়ে নিয়েছিলেন সাঙ্গাকারার কিপিং গ্লাভস। পাকাপাকিভাবে কিপিং ছাড়ার পর প্রথম টেস্টেই সাঙ্গাকারা খেললেন ২৮৭ রানের ইনিংস, মাহেলা জয়াবর্ধনের সাথে ৬২৪ রানের বিশ্ব রেকর্ড জুটি। ব্যস, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

পরে আর একটি মাত্র টেস্টেই কিপিং করেছিলেন সাঙ্গাকারা। নিয়মিত কিপারের চোটে ২০০৮ সালে কিপিং করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। কিপার হিসেবে ৪৮ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ৪০.৪৮, কিপিং ভার না থাকা ৮৪ টেস্টে সেঞ্চুরি ৩১টি, ব্যাটিং গড় ৬৮.০৫! সাঙ্গাকারা তাই নির্বাচকেরা চাপিয়ে দেয়া ওই সিদ্ধান্তের মর্মটা বুঝতে পারছেন খুব ভালোভাবে। এটা দুর্দান্ত ছিলো যে তারা আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে না দিয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আজ আমি যতো রান করেছি, যতো সেঞ্চুরি করেছি, সেটার পেছনে বড় প্রভাব ছিলো কিপিং ছাড়ার সেই সিদ্ধান্তের।

Leave a comment