চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে ছয়টি ইউনিয়ন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি

মাখালাডাঙ্গা নেহালপুর ও গড়াইটুপি নতুন ইউনিয়ন গঠিত : জেলায় ৩৫টি থেকে বেড়ে ৩৮টি ইউনিয়নে উন্নীত

 

রফিকুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বড় তিনটি ইউনিয়ন পরিষদকে বিভক্ত করে ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পুনর্গঠিত ও নবগঠিত ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ হলো শঙ্করচন্দ্র (পুনর্গঠিত) ও মাখালডাঙ্গা (নবগঠিত), বেগমপুর (পুনর্গঠিত) ও নেহালপুর (নবগঠিত) এবং তিতুদহ (পুনর্গঠিত) ও গড়াইটুপি (নবগঠিত)। এ নিয়ে জেলায় ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা ৩৫টি থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৮টিতে। বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন নতুন জেলা প্রশাসকের কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করার আগের দিন গত ২৪ জুন প্রজ্ঞাপন তিনটি জারি করেন এবং গেজেট প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশন বরাবর পাঠানো হয়।

১৯টি গ্রাম নিয়ে শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো শঙ্করচন্দ্র ও শঙ্করচন্দ্র এশিয়াপাড়া। ২নং ওয়ার্ডের গ্রাম চারটি হলো, শঙ্করচন্দ্র বসুতিপাড়া, শঙ্করচন্দ্র ঠাকুরপাড়া, শঙ্করচন্দ্র দোয়ারপাড়া ও শঙ্করচন্দ্র স্কুলপাড়া। ৩নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম মনিকদিহি। ৪নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, ফুলবাড়ী ও জালশুকা। ৫নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম হলো ছয়ঘরিয়া। ৬নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, বসু ভাণ্ডারদহ ও রোজিপুরপাড়া। ৭নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, নতুন ভাণ্ডারদহ ও কালী ভাণ্ডারদহ। ৮নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, যুগীরহুদা ও যুগীরহুদা মিলপাড়া। ৯নং ওয়ার্ডের তিনটি গ্রাম হলো, বহালগাছি, কিরণগাছি ও যাদবপুর। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

১৩টি গ্রাম নিয়ে নবগঠিত মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, মাখালডাঙ্গা ও দীননাথপুর পোস্টঅফিসপাড়া। ২নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম দীননাথপুর। ৩নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম গাইদঘাট। ৪নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, কুকিয়া চাঁদপুর ও গাইদঘাট দক্ষিণপাড়া। ৫নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম উকতো। ৬নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, শ্রীকোল ও দীননাথপুর চৌধুরীপাড়া। ৭নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম হানুরবাড়াদী। ৮নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম গাড়াবাড়িয়া। ৯নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, জাফরপুর ও ঠাকুরপুর। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

১৪টি গ্রাম নিয়ে বেগমপুর ইউনিয়ন পুনর্গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের গ্রাম দুটি হলো, বেগমপুর হাটপাড়া ও বেগমপুর বগুলাপাড়া। ২নং ওয়ার্ডের গ্রাম তিনটি হলো, বেগমপুর কলোনিপাড়া, বেগমপুর চিলমারীপাড়া ও বেগমপুর বিলপাড়া। ৩নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম ঝাঁজরি। ৪নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম যদুপুর। ৫নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হরিশপুর ও ফুরশেদপুর। ৬নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, শৈলমারী ও উজলপুর নীলমারীপাড়া। ৭নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম উজলপুর। ৮নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম আকন্দবাড়িয়া। ৯নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম রাঙ্গিয়ারপোতা। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

১৪টি গ্রাম নিয়ে নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম বোয়ালিয়া। ২নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম নেহালপুর দক্ষিণপাড়া। ৩নং ওয়ার্ডের তিনটি গ্রাম হলো, নেহালপুর পূর্বপাড়া, নেহালপুর পশ্চিমপাড়া ও বোয়ালিয়া চৌধুরীপাড়া। ৪নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, হিজলগাড়ী ও নলবিলা। ৫নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, ডিহি ও রনগোহাইল। ৬নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম কৃষ্ণপুর। ৭নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম দোস্ত। ৮নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম কুন্দিপুর। ৯নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, কোটালী ও দর্শনা। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

১৫টি গ্রাম নিয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন পুনর্গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, চাঁদপুর ও নুরুল্লাপুর। ২নং ওয়ার্ডের চারটি গ্রাম হলো, গিরিশনগর, আড়িয়ারচক, ৬৩ আড়িয়া ও ৬২ আড়িয়া। ৩নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম হলো, ছোটসলুয়া। ৪নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, বলদিয়া মাদরাসাপাড়া ও বলদিয়া কাজলাপাড়া। ৫নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম হলো, বলদিয়া বাইনেগাড়ি ও বলদিয়া পুরাতনপাড়া। ৬নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম বড়সলুয়া দক্ষিণপাড়া। ৭নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম উত্তরপাড়া। ৮নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম হুলিয়ামারী। ৯নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম তিতুদহ। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

১৬টি গ্রাম নিয়ে নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম কালুপোল। ২নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম গোষ্টবিহার ও খেজুরতলা। ৩নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম খাড়াগোদা ও জামালপুর। ৪নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম গড়াইটুপি ও বিত্তিরদাড়ি। ৫নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম তেঘরি ও কলাগাছি। ৬নং ওয়ার্ডের একমাত্র গ্রাম গহেরপুর। ৭নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম বাটিকাডাঙ্গা ও সুজায়েতপুর। ৮নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম সড়াবড়িয়া ও খাসপাড়া। ৯নং ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম গবরগাড়া ও ছিলিন্দিপাড়া। এছাড়া নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।

ইউনিয়ন বিভক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা নেহালপুর গ্রামের শাহীন আহমেদ ও তিতুদহ গ্রামের শুকুর আলী জানান, ইউনিয়ন বিভক্তির ফলে এলাকাবাসীর সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণের দুর্ভোগ কমবে। শঙ্করচন্দ্র ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন ও তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বিভক্তির বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ইউনিয়ন বিভক্তির দাবি ছিলো। অবশেষে সেই দাবি পুরণের পথে। এতে ইউনিয়নবাসী উপকৃত হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, প্রজ্ঞাপন জারির পর নির্বাচন কমিশন থেকে গেজেট প্রকাশ করা হবে। গেজেট কপি হাতে পেলেই ওয়ার্ড ভিত্তিক ভোটার বিভক্তির কাজ শুরু হবে। প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৩০ থেকে ৩২ হাজার করে। ছয়টি ইউনিয়নে বিভক্তির পর প্রতিটি ইউনিয়নে ১৫ থেকে ১৬ হাজার ভোটার সংখ্যা দাঁড়াবে।