সাংবাদিক বাবাকে কেন হত্যা? জিজ্ঞাসা নিষ্পাপ দু শিশু রুদ্র ও রণকের

জীবননগর ব্যুরো: সাংবাদিক বাবা আবু সায়েমকে কেন হত্যা করা হলো এ প্রশ্ন নিহত সায়েমের নিষ্পাপ দু শিশু সন্তান ৭ বছরের রুদ্র ও ৫ বছরের রণকের। মাত্র ৩২ বছরে তরুণ মেধাবী সফল ব্যবসায়ী ও সাংবাদিককে কেন এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হলো এ প্রশ্ন সকলের। কেন ছোট্ট রুদ্র ও রনকের এ বয়সে এতিম হতে হলো? রেশমা খাতুন ওরফে আফরোজাকে কেন এ বয়সে বিধবা হতে হলো? এ পশ্নের জবাব এখন পর্যন্ত উদঘাটিত হয়নি। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে নিহত সায়েমের মা-বাবার। তারা এ বয়সে ছেলের চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। মানতে পারছেন না তার রাজনৈতিক ও সংবাদ মাধ্যমের সহকর্মীরা। নিহত সায়েমের ঘাতকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এগিয়ে এসেছে তার প্রতিবেশীরাসহ পিয়ারাতলা গ্রামবাসী।

গত ৭ জুলাই জীবননগর উপজেলার পিয়ারাতলা গ্রামের বাড়ির শয়নকক্ষে ঘাতকের উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম হন তরুণ এ সাংবাদিক। আহত সাংবাদিক আবু সায়েমকে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। এখানে চিকিৎসকরা তার অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রাতেই নেয়া হয় যশোরে। যশোর থেকে সায়েমকে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে রেফার করা হলে পরের দিন দুপুরে আবু সায়েমকে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জরুরিভাবে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে শুরু করেন অপারেশন। এ সময় সাংবাদিক আবু সায়েমকে ছুরিকাঘাতে আহত করার প্রতিবাদে জীবননগর প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডে চলছিলো মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা। এ কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে তরুণ এ সাংবাদিকের মৃত্যুর খবর আসে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার সহকর্মীরা। দাবি ওঠে আটককৃত ঘাতক রাজিব সরকারের নিকট থেকে হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের।

পুলিশ ঘাতক রাজিবকে আদালতে সোপর্দ পূর্বক ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার গুরুবাবাকে কুষ্টিয়ার দৌলৎপুর থেকে গ্রেফতার করে। তারপরও এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ রয়েছে অন্ধকারে। সাংবাদিক সায়েম নিছক হত্যাকাণ্ডের শিকার না-কি পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়েছে তা জানতে চান তার পরিবারসহ রাজনৈতিক ও সাংবাদিক সহকর্মীরা। এ জন্য চলছে ধারাবাহিক কর্মসূচি। সর্বশেষ গত ২৮ জুলাই জীবননগর বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জাসদ কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নিহত সাংবাদিকের দু শিশুপুত্র রুদ্র ও রণক ‘বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই এবং আমার বাবাকে কেন হত্যা করা হলো জানতে চাই’ শিরোনাম সংবলিত প্লাকার্ড নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেয়।