ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে এক মহিলার ঘরে ঢুকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে আনিচুর রহমান আনিচ নামে পুলিশের এক এএসআইকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে গ্রামবাসী। তিনি হরিণাকুণ্ডুর ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ওই মহিলার সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
গ্রামবাসী ও পুলিশসূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভবানীপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের তালাকপ্রাপ্ত মেয়ের ঘরে ঢোকেন এএসআই আনিছুর রহমান। এ সময় গ্রামবাসীর মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হলে তারা রাতেই বাড়িটি ঘেরাও করে। খবর পেয়ে হরিণাকুণ্ডু থানা পুলিশ মধ্যরাতে এএসআই আনিচকে উদ্ধার করে থানায় নেয়। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে জানাজানি হলে ঘটনার পরপরই ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
গ্রামের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আনিচ প্রায়ই ওই বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। ক্যাম্পের দারোগা বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতো না। এ বিষয়ে ভবানীপুর ক্যাম্পের আইসি ফরিদ উদ্দীন জানান, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ভবানীপুর ক্যাম্পে যোগদান করেন এএসআই আনিচ। গত ২০ জুলাই তিনি বদলি হয়ে যান ঝিনাইদহের হাটগোপালপুর ক্যাম্পে। ২১ জুলাই মঙ্গলবার রাতে ওই বাড়িতে তিনি অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ওহিদুল ইসলাম জানান, রাতে ঘুমানোর সময় সংবাদ পাই ওই ক্যাম্পের বদলি হওয়া দারোগা আনিচ অনৈতিক কাজ করতে সিরাজুলের বাড়িতে ঢুকেছে। এ সময় গ্রামের মানুষ জোটবদ্ধ হয়ে তাকে ধরে ফেলে। হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল কবির জানান, এএসআই আনিচ ওই মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন। মেয়েটির একাধিকবার বিয়ে হয়েছে বলেও তিনি জানান। এএসআই আনিচের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিভাগীয় মামলা হয়েছে বলে ওসি জানান। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, এএসআই আনিচের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে আনিচের বক্তব্য নিতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে গ্রামবাসীর অভিযোগ ভবানীপুরের দু পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদ ও আনিচ এলাকাবাসীর কাছে আতঙ্ক। তাদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন ভাবানীপুরের মানুষ। সাধারণ মানুষকে বিএনপি ও জামায়াত বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ভবানীপুরের রাজ্জাক, শহিদুল, বোরহান, শরিফুল, রশিদ, তহিদুল, হারুন, মাসুদ, জাহিদ, বলরামপুরের এক গরুব্যবসায়ী, বাবু, সারের দোকানদার রহমান, বিল্লালসহ বহু মানুষের কাছ থেকে দু পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদ ও আনিচ বিপদে ফেলে টাকা আদায় করেছেন, যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।