টানা বৃষ্টির কারণে জীবননগরে আট শতাধিক চাতাল শ্রমিক বেকার

 

জীবননগর ব্যুরো: গত ১৫ দিনের টানা বৃষ্টির কারণে জীবননগর উপজেলার প্রায় দেড় শতাধিক চাতালকল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কাজ নেই মজুরি নেই এ চুক্তিতে কর্মরত প্রায় ৮ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ছেন। বর্তমানে ধার-দেনা ও অগ্রিম শ্রমবিক্রি করে চলছে তাদের জীবিকা। এদিকে চাতালকল মালিকরাও সিদ্ধ ধান নষ্ট হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় দিন গুনছেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এরকম বিরূপ আবহাওয়া আরও কিছুদিন চলতে থাকলে বাজারে চালের সরবরাহ কমে যাবে এবং চালের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনার আশঙ্কাও রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে দেশের বৃহৎ চাল উৎপাদনের মোকাম জীবননগর উপজেলার লক্ষ্মীপুরে ১১৮টিসহ উপজেলার দেড় শতাধিক চাতালকলের মধ্যে সবগুলোই বন্ধ রয়েছে। কোনটিতে আবার সিদ্ধ ধান নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন চাতাল শ্রমিক ও মালিক উভয়ই। তারা একটু সূর্যের আলো দেখা পাওয়ার সাথে সাথে টুপরির ভেতরের ধান নাড়াচড়া করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দেড় শতাধিক চাতালে কর্মরত ৮ শতাধিকের অধিক শ্রমিকের নির্ধারিত কোনো মজুরি নেই। তাদের মজুরি নির্ধারিত হয় ধানের মাঠ হিসেবে। স্বাভাবিক আবহাওয়ায় একটি মাঠ উঠতে সময় লাগে ২-৩ দিন। মাঠ উঠলেই কেবল একজন শ্রমিক ১৫০ টাকা থেকে ২শ টাকা মজুরি এবং দৈনিক খোরাকি বাবদ ৩ কেজি ভাঙা চাল পান। চাতাল বন্ধ থাকলে বা চাতালে কাজ না থাকলে তারা কোনো মজুরি পান না। গত ১৫ দিনের টানা বর্ষণের কারণে চাতালে ধান শুকানোসহ কোনো কাজ করা সম্ভব না হওয়ায় তারা কোনো মজুরি পাচ্ছেন না। এদিকে তাদের মজুরি সামান্য ও কম হওয়ায় সংসারে খরচ চলে না। তার ওপর ১৫ দিনের টানা বৃষ্টির কারণে অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। চাতালকলের কাজ বন্ধ থাকায় তারা বর্তমানে অর্থকষ্টে পতিত হয়েছেন। কেউ কেউ ধার-দেনা বা চাতাল মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম শ্রম বিক্রি বাবদ টাকা গ্রহণ করে সংসার পরিচালনা করছেন। এদিকে প্রায় অধিকাংশ চাতালেই দেখা গেছে সিদ্ধ ধানের স্তূপ। রোদ না থাকায় এসব সিদ্ধ ধান নিয়ে শ্রমিকদের মতো চাতাল মালিকরাও রয়েছেন বিপদে। কারণ এসব সিদ্ধ ধান রোদ না থাকলে ও দীর্ঘদিন স্তূপাকারে থাকলে জমাট বেঁধে তা নষ্ট হয়ে যাবে।

Leave a comment