আল বিদা মাহে রমজান

 

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ২৮ রমজান। আমরা মাহে রমজানের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছে পূণ্যস্নাত এ মাসটি। কাল চাঁদ দেখা গেলে পরশু ঈদ। হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ (মেশকাত: মুসলিম)। ঈদের চাঁদ দেখার ব্যাপারে নবী করীম (সাঃ)-এর নির্দেশ হলো, যদি মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে রোজা ৩০টি পূর্ণ করো (সহীহ মুসলিম)। ঠিক একই বিষয় আরও অনেক সহীহ হাদিসে বর্ণিত আছে। নিজ চোখে এবং খালি চোখে চাঁদ দেখার চেষ্টা করাও নবীজির একটি সুন্নত। এটি একটি অত্যন্ত সহজ হিসাব এবং সকলের জন্য এটাই সুবিধাজনক। এর ভেতরে কোনো জটিলতা নেই। একটি দেশের মধ্যে যদি কোনো এক জায়গায় চাঁদ দেখা যায় তাহলে তা সেই দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে হাদিসে বর্ণিত আছে যে, এক দেশের চাঁদ অন্য দেশের জন্য প্রযোজ্য হবে না (সহীহ মুসলিম)। ইসলাম অত্যন্ত সহজ একটি ধর্ম। পবিত্র কোরআনে চাঁদকে একটি ঝুলন্ত ক্যালেন্ডার এবং আল্লাহ তায়ালার কুদরতের নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন চাঁদ আল্লাহর অপার কুদরতের একটি জ্বলন্ত নিশানা। নতুন চাঁদ দেখে আল্লাহর রসুল (সাঃ) আমাদের এ দোয়া পড়ার কথা বলেছেন, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমা-নি ওয়াছ ছালামাতি ওয়াল ইসলামি, রব্বী ওয়া রব্বুকাল্লাহ; হিলা-লু রুশদি ওয়া খইর। অর্থঃ হে আল্লাহ, এই চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত কর নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে। হে চাঁদ তোমার ও আমার প্রভু একমাত্র আল্লাহ (তিরমিজি)। এছাড়া অন্যান্য দোয়ার কথাও হাদিসে বর্ণিত আছে। আমরা অনেক সময় ঈদের নতুন চাঁদ দেখে সব কিছু ভুলে যাই, ইবাদতের কথা আর মনে থাকে না। অথত ঈদের রাত অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, যদি কোন ব্যক্তি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজাহার রাত জেগে ইবাদত করে তাহলে যে দিন অন্যান্য দিল মরে যাবে সেদিন তার দিল মরবে না অর্থাৎ কিয়ামতের দিনের আতঙ্কে কারণে অন্যান্য লোকের অন্তর ঘাবড়ে গিয়ে মৃতপ্রায় হয়ে যাবে, কিন্তু দু ঈদের রাত্রে জাগরণকারীর অন্তর তখন ঠিক থাকবে (তাবারানি, ফাযায়েলে রমজান, বেহেশতী জেওর)। সুতরাং ঈদের দিন রাতেও আমাদের বেশি বেশি ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত।

Leave a comment