মন্ত্রী হলেন বিএসসি কামাল ইয়াফেস : নতুন প্রতিমন্ত্রী তারানা ও নুরুজ্জামান
স্টাফ রিপোর্টার: বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় নতুন পাঁচ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান। এর মাধ্যমে মন্ত্রিসভার কলেবর আরেক দফা বাড়ল। এ যাত্রায় মন্ত্রিসভা থেকে কেউই বাদ পড়েননি। তবে ঈদের পর আরেক দফা রদবদল ঘটতে পারে।
শপথ নেয়া পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে তিনজন নতুন মুখ, বাকি দুজন প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণমন্ত্রী হয়েছেন। শপথ গ্রহণের পরপরই মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে দফতর পুনর্বন্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম বিএসসি, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এরমধ্যে নুরুল ইসলাম টেকনোক্র্যাট কোঠায় মন্ত্রী হয়েছেন। এছাড়া নতুন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম ও লালমনিরহাট-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহমেদ। নুরুল ইসলামকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইয়াফেস ওসমানকে আগের মন্ত্রণালয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকেও আগের মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্রে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে তারানা হালিমকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং নুরুজ্জামান আহমদকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে বিমুক্ত করা হয়েছে। গত ৯ জুলাই সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে বাদ দেয়ার পর খন্দকার মোশাররফ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেও তার আগের দপ্তর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বও পালন করছিলেন।
গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরবার হলে প্রবেশের পর শুরু হয় শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ভুঁইঞা। সংক্ষিপ্ত আয়োজনে বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শপথে তাদের পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়ের আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিমসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নুরুল ইসলাম বিএসসি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, আমি যে দায়িত্ব পাবো, সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিকারের ব্যবস্থা করবো। অন্যদিকে তারানা হালিম তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থেকে যাতে আমি অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারি, সেজন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই।
মন্ত্রিসভার এবারের কলেবর বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় চমক ছিলেন লালমনিরহাট-২ আসন থেকে এবারই প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া নুরুজ্জামান আহমেদ। কেউ কেউ নুরুজ্জামান আহমেদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি তার অনলবর্ষী বক্তব্যের পুরস্কার হিসেবেই দেখছেন।
হজ নিয়ে বিতর্কিত এক মন্তব্যের কারণে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী গত বছরের ১২ অক্টোবর ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে বাদ পড়েন। ওই পদ এখনও শূন্য। গত ৯ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়। স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয় মন্ত্রিসভারই আরেক সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রিসভায় ২৯ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুজন উপমন্ত্রী ছিলেন। নতুন তিনজনকে নিয়ে মন্ত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ জনে।