চুয়াডাঙ্গার ছেলের কৃতিত্ব:
স্টাফ রিপোর্টার: মাছের লবণ নিয়ন্ত্রণকারী ও লবণসহনশীল জিন শনাক্ত করেছেন চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার কৃতীসন্তান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে চিংড়ি-জাতীয় মাছ ক্রে-ফিসের ওপর গবেষণা করে তিনি এই জিন শনাক্ত করেন। এই গবেষণার জন্য তিনি অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন মাত্রার অম্লীয় ও ক্ষারীয় পরিবেশ থেকে ক্রে-ফিসের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং তা অত্যাধুনিক ডিএনএ ও আরএনএ সিকুয়েন্সারের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সকল জিনের নিউক্লিও কাঠোমোর উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এই জিন হলো জীবন রহস্যের আসল উপাদান। সংগ্রহকৃত সকল উপাত্ত তিনি আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে জমা দেন এবং অন্য প্রজাতির মাছের জিনের সাথে এর তুলনা করেন। হাজারো জিনের ভেতর থেকে তিনি ১০টিরও বেশি জিন শনাক্ত করেছেন যেগুলো সরাসরি মাছের অভিস্রাবণ, লবণ এবং অম্লতা নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মাত্রার অম্লীয় ও ক্ষারীয় পরিবেশে এ সকল জিনের প্রকাশমাত্রা (জিন এক্সপ্রেশন) পর্যবেক্ষণ করছেন। কারিগরি সহযোগিতা ছাড়াও তার এ গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করছে অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং অস্ট্রেলিয়া সরকারের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা বিভাগ। তার এই গবেষণার ওপরে ইতোমধ্যে তিনটি গবেষণাপত্র ইউরোপ থেকে প্রকাশিত জিন ও মেরিন জেনোমিক্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। আরো দুটি গবেষণাপত্র খুব শিগগিরই প্রকাশিত হবে। তার এ গবেষণালব্ধ তথ্য বাংলাদেশের চিংড়ি মাছ বিশেষ করে গলদা ও বাগদার জীবন রহস্য উন্মোচন এবং লবণসহনশীল জিন শনাক্ত করতে সাহায্য করবে। গলদা ও বাগদার লবণসহনশীল জিন শনাক্ত করতে পারলে ভবিষ্যতে বাগদা চিংড়িকে ধীরে ধীরে মিঠাপানিতে অভ্যস্ত করানো সহজ হবে এবং নদী বা পুকুরের মিষ্টি পানিতেও তা চাষ করা যাবে। এর ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাটির গুণাগুণও রক্ষা করা সম্ভব হবে। নবীন জিনবিজ্ঞানী প্রফেসর ইউসুফ আলী ভবিষ্যতে বাংলাদেশের গলদা, বাগদা ও অন্য চিংড়ি মাছের জীবন রহস্য নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। ডক্টরেট ডিগ্রির অংশ হিসেবে তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে মাছের জিনতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন। দৈনিক মাথাভাঙ্গার তিনি একজন নিয়মিত লেখক।