স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা মর্তুজাপুরের জাফর আলী ওরফে জাফর ইমামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন ছয়ঘরিয়া গ্রামের সুখজান খাতুন। গত ২৮ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছেন ভুয়া কাজি সেজে জাল বিয়ে ও তালক রেজিস্ট্রি করে আসছেন।
সুখজান খাতুন অভিযোগে বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের মর্তুজাপুরের মৃত বদর উদ্দিনের ছেলে জাফর আলী ওরফে জাফর ইমাম দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি করে আসছেন। আমার স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ৫ মাস আগে আমার স্বামী পুনরায় আমাকে বিয়ে করার জন্য নামধারী কাজি জাফর ইমামের কাছে যায়। এ সময় জাফর কাজি জানান, আগে যে তালাক হয়েছে তা সঠিক নয়। পুনরায় তালাক ছাড়া বিয়ে হবে না। সেকারণে একটি তালাকনামায় স্বাক্ষর করিয়ে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়িয়ে রেজিস্ট্রি করে দেন। পরে বিয়ের কাগজ নিতে গেলে টালবাহানা শুরু করেন। জাফর আলী বলেন, বিয়ের কাগজ নিতে চাইলে ৬ হাজার টাকা লাগবে, তা না হলে কাগজ দেয়া যাবে না। আবার বলেন, বিয়ে হয়েছে মাত্র ৫ হাজার টাকা দেনমোহরে। কখনো বলেন তোমাদের বিয়েই হয়নি। শুধু তালাক হয়েছে। বিয়ে ও তালাকের কাগজের জন্য চাপ সৃষ্টি করলে কাজি জাফর আলী আমকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। সর্বশেষে আমি গত ২৩ জুন মঙ্গলবার দুপুরে কাজি জাফর আলীর বাড়িতে যাই। তিনি আমার আসার কথা জানতে পেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। মোবাইলফোনে রিং দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় তার ঘরে টেবিলের ওপর একটি সবুজ বই দেখতে পাই। দেখে মনে হলো বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রির বই। এ বইতে আমার বিয়ে ও তালাক লেখা আছে। সে কারণে ওই বইটি নিয়ে আসি এবং যাচাই করে দেখি প্রায় ৭০টির মতো তালাক লেখা আছে। বইটি দেখে মনে হলো জাল রেজিস্ট্রি করার জন্য কোনো প্রেস থেকে ছাপানো হয়েছে। সে কারণে আমি বইটি আইনের হাতে তুলে দিই।
সরেজিনে জানা যায়, জাফর আলী স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। তার বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে রেজিস্ট্রির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার কাছ থেকে বিয়ে ও তালাকের নকল তুলতে হয়রানির শিকার হতে হয়। কাজি জাফরের সাথে যোগাযোগের জন্য তার বাড়িতে যাওয়া হলে তাকে না পাওয়ায় আবু ওবাইদা নিজেকে কাজির ছেলে পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার বাবা বিয়ে পড়ায়। পরবর্তীতে জাফর আলীর সাথে দেখা হলে তিনি বলেন, আমি আগে পড়াতাম এখন আর পড়াই না। প্রায় ৪/৫ বছর আগে বিয়ে পড়ানো ছেড়ে দিয়েছি।