জামিনে মুক্তি পেলেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী

স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। গতকাল সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রিজন সেল থেকে তিনি মুক্তি পান। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

জানা গেছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার ১৭ মামলায় ২৬ মে ও ২৩ জুন লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দেন বিচারপতি নিজামুল হক ও বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীর নেতৃত্বে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নেছার আলম বলেছেন, উচ্চ আদালত থেকে লতিফ সিদ্দিকীর জামিনের কাগজপত্র পাওয়ার পর আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে লতিফ সিদ্দিকীর মুক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে কটূক্তি করেন ওই সময়কার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। ওই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এ নিয়ে পরের দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের পর দেশে ও দেশের বাইরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন ও ইসলামিক সংগঠনগুলো লতিফ সিদ্দিকীর বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করে। দেশব্যাপি নিন্দা ও প্রতিবাদের মধ্যে লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে মোট ২২টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ১৭ মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালত সূত্র জানায়, ২৩ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় একটি করে এবং চট্টগ্রামের সাতটি মামলায় তার জামিন মঞ্জুরসহ রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে লতিফ সিদ্দিকীর বিরদ্ধে এ ১০ মামলা কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এর আগে ২৬ মে সাত মামলায় লতিফ সিদ্দিকীকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দেন আদালত। বাকি ৫টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা না থাকায় সোমবার তিনি কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান।

আদালতে ওই সময় লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির। টাঙ্গাইলে প্রভাবশালী কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই ৭৭ বছর বয়সী লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে পাঁচ পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। গত মহাজোট সরকারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। শেখ হাসিনা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধা লতিফ সিদ্দিকীকে প্রায় ছয় বছর কারাগারে কাটাতে হয়।

Leave a comment