কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় অপহরণের ১৭ দিনেও খোঁজ মেলেনি ইটভাটা ব্যবসায়ী মিরাজের। শনিবার বেলা ১২টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিখোঁজ ব্যবসায়ী মিরাজুল হক মিরাজের স্ত্রী সখি খাতুন। তিনি বলেন, ভাই আমার স্বামী আজ ১৭ দিন ধরে নিখোঁজ। প্রতিদিন পথের দিকে চেয়ে থাকি এই বুঝি স্বামী ফিরে এলো। আমার সন্তান দুটোও তাদের পিতার জন্য অপেক্ষায় দিন গোনে। ওকে হারিয়ে আমরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছি। আজ কেউ আমাদের পাশে নেই।
গত ৪ জুন রাত ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জয়নাবাদ এলাকা থেকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শহরের বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী মিরাজুল হক (৪৬)। তিনি কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া এলাকার মৃত আবদুল গনির ছেলে। তার এই নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পরিবারের সন্দেহের তীর ব্যবসায়ী পার্টনার কোহিনুর-আলতাফের দিকে। এ ব্যাপারে মিরাজের স্ত্রী সখি খাতুন গত ৬ জুন দুপুরে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন এবং একই সাথে ৱ্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পেও অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে অপহৃত মিরাজের ছোট ভাই মেজবাউর রহমান জানান, মিরাজের কর্মজীবনের শুরু নৌকার দাঁড়টানা মাঝি হিসেবে কর্মময় জীবন শুরু করলেও নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও সততার গুনে আস্তে আস্তে তিনি বালি ব্যবসায় নিজের ভালো অবস্থান তৈরি করেন। এক পর্যায়ে মিরাজ বালিমহাল ইজারা নেয়া শুরু করেন। পাশাপাশি গড়াইনদীর তীরে গড়াই ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাজ করছিলেন। আগামী নির্বাচনে কুমারখালীর চাপড়া ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। মেজবাউরের দাবি অর্থ আর অতিরিক্ত জনপ্রিয়তা কারণেই তার ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, মিরাজের ব্যবসায়িক পার্টনার কোহিনুরও একই ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চাইছিলেন। মিরাজ নিখোঁজের পর থেকে কোহিনুর তার ভাই আলতাব মাস্টার ও চাচাতো ভাই শাহজাহান গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের ব্যবহৃত ফোনও বন্ধ। অর্থ আত্মসাত ও নির্বাচনে পথের কাঁটা সরাতে কোহিনুর গংরা মিরাজকে অপহরণ করেছে বলে দাবি মেজবাউরের। মিরাজের স্ত্রী সখি খাতুন, স্বামী উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মিরাজ লাহিনীপাড়া গ্রামের ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও চাপড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।