গাংনী প্রতিনিধি: বউকে ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগে সুমন হোসেন (৩০) নামের এক যুবককে হাতুড়িপেটা করেছে স্বামী আওয়াল হোসেন। গুরুতর জখম অবস্থায় সুমনকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন চিকিৎসক। গতকাল রোববার দুপুরে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সুমন হোসেন কাজিপুর গ্রামের খন্দকারপাড়ার সমসের আলীর ছেলে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে বাইসাইকেলযোগে গ্রামের সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন সুমন হোসেন। হাজিপাড়ার বন্দে আলীর বাড়ির সামনে পৌঁছুলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একই গ্রামের মৃত খুরিশদ আলীর ছেলে আওয়াল হোসেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ফেলে আওয়াল পালিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন সুমনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে বিকেল পর্যন্ত চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, মাস দুয়েক আগে আওয়ালের স্ত্রী দু সন্তানের জননী মিনুয়ারা খাতুন বাড়ির লোকজনকে না জানিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমায়। নিখোঁজের ব্যাপারে মিনুয়ারার পিতা আওয়ালের নামে গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। কিছুদিন পর স্বামী খবর পায় মিনুয়ারা ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করছে। ঢাকা থেকে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন আওয়াল। মিনুয়ারার পিতা ও আওয়ালের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এক সমঝোতার মধ্য দিয়ে মিনুয়ারা-আওয়ালের সংসার জীবন আবারো শুরু হয়। কিন্তু আওয়ালের মনে সন্দেহ থেকে যায়। স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয়ার সন্দেহের তীর একই গ্রামের যুবক সুমনের দিকে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন সমালোচনাও শুরু হয়। কিন্তু সঠিক তথ্য প্রমাণ কেউ-ই দিতে পারছিলেন না। তারপরও প্রতিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠেন আওয়াল। এর জের ধরে সুমনকে পেটানো হয়েছে বলে ধারণা করছে গ্রামবাসী। সুমনের পরিবারের দাবি, মিনুয়ারা পালিয়ে যাওয়ার পেছনে সুমনের কোনো হাত ছিলো না। শুধু সন্দেহের বশে তার ওপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। তার অবস্থা চরম আশঙ্কাজনক। সে বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকালই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জানিয়ে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, আওয়াল পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।