ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে গোকুলখালী পশু হাট : গরু-ছাগলের আমদানি
ভালাইপুর প্রতিনিধি: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে আলমডাঙ্গা গোকুলখালী পশুহাট। হাটে আশানুরুপ ক্রেতার সমাগম ঘটলেও প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগল আমদানি এবং অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম কম হওয়ায় অধিকাংশ গরু-ছাগল ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন খামারিরা।
ভালাইপুর গ্রামের এক গরুপালনকারী বলেন, যে গরু গত বছরে দাম ছিলো ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা অথচ এ বছর বিক্রি করলাম মাত্র ৫৫ হাজার টাকায়। কুরবানির গরু কিনতে আসা জাসদ নেতা তৌহিদ হোসেন বলেন, গতবার যে গরু ৭০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম এবার সেই গরুর কিনলাম ৪০ হাজার টাকায়। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গোকুলখালী পশুহাটে ঘুরে দেখা যায়, দূর দুরান্ত থেকে গরুপালনকারী, খামারিরা ও ব্যবসায়ীরা ট্রাক, নসিমন, করিমন, পাউয়ার টিলার ও লাটাহাম্বারযোগে হাজার হাজার গরু নিয়ে আসছে। কয়েক গরু ব্যবসায়ীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, এ বছর ভারতীয় গরুর ব্যাপক চাপ থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনাই এ বছর গরুর দাম তুলনামূলকভাবে অর্ধেকে নেমে এসেছে। তারপরও বাজারে প্রচুর ক্রেতা থাকা সত্বেও বেচাকেনা নেই বললেই চলে। হাটমালিক চিৎলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান বলেন, গরু-ছাগরের দাম গত বছরের তুলনাই কম হলেও হাটে ব্যাপকহারে গরু আমদানি হয়েছে। কিন্তু আশানুরুপ বেচাকেনা নেই বললেই চলে। আমরা হাটের পক্ষ থেকে সন্ধ্যার পর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সুবিধার্তে জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছি। অগ্রণী ব্যাংকের দু কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ ও সোলায়মান বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এ সব পশুহাটে ব্যাপকহারে জালটাকার ব্যবহার হয়ে থাকে। কেউ যাতে কোনো ধরনের জাল টাকার কারবার করতে না পারে সেজন্য আমরা শনাক্তকারী মেশিন দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার টাকা গুনে দিচ্ছি। গোকুলখালী পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই হাবিবুর রহমান বলেন, হাটমালিক ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্তে সকাল থেকে প্রশাসনিক সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে ক্রেতা সাধারণ অভিযোগ করে বলেন, শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে খাজনা নেয়ার কথা থাকলেও ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে খাজনার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জীবননগর উপজেলার পশুর হাটগুলোতে গরু-ছাগলের আমদানি বেড়েছে। ঈদ যতোই ঘনিয়ে আসছে পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় ততোই বাড়ছে। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি তাই ক্রেতারা সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানির পশু কেনার জন্য বিভিন্ন হাটে ছুটে বেড়াচ্ছেন। আর কাঙ্খিত দাম পাওয়ার আশায় বিক্রেতারাও গরু-ছাগল নিয়ে ছুটছেন বিভিন্ন পশুহাটে।
গত কয়েকদিনে উপজেলার হাটগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শিয়ালমারী পশুহাট সবচেয়ে বড়; এ কারণে দেশের সকল স্থানের ক্রেতারা এ হাটে ভিড় জমাচ্ছেন। হাটে আসা ক্রেতারা জানান, হাটগুলোতে কোরবানির পশুর পরীক্ষার জন্য সরকারিভাবে চিকিৎসক বা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। ফলে ক্রেতারা কোরবানির জন্য পশু ক্রয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে গরু-ছাগল বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জন্য টাকা লেনদেনসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানে হাট ইজারাদারের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। হাটে রাতেও যাতে কোরবানির পশু বেচাকেনা চলে এজন্য আলো ও গরু রাখার ব্যবস্থাসহ স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।