মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা ও মুজিবনগরে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে গতকাল বুধবার সেনিটেশন মাস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে ‘আমার হাতেই আমার সুস্বাস্থ্য’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় সেনিটেশন মাস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বেলা ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাসভা। চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম. রেজাউল করিম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিন, অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ এস.এম ইসরাফিল ও হারুন অর রশিদ। স্বাগত বক্ত্যব রাখেন চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর আলী।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা সেনিটেশন শতভাগ কভারেজ অর্জন করতে পারলেও আর্সেনিকমুক্ত পানি পানে শতভাগ সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। যদি মানুষ সচেতন হয় তবেই সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে সেনিটেশনের মাস সফলতার মুখ দেখবে। তাই, যারা অসচেতন তাদেরকে সচেতন করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্ত্যব রাখেন জেলা তথ্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আল আজাদ, ডা. সাইফুল ইমাম ও সিনিয়র সাংবাদিক মাহতাব উদ্দিন।
এ সময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সেনিটেশন মাস উপলক্ষে বক্তারা নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন- শুধু পানি দিয়ে হাত ধুলে হাত জীবাণুমুক্ত হয় না। সাবান ও পানি দিয়ে সঠিকভাবে দু হাত ধুয়ে প্রায় ৫০ ভাগ ডায়রিয়া ও ২৫ ভাগ নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব। এছাড়াও সঠিকভাবে দু হাত ধুয়ে সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু, ত্বক ও চোখের ইনজেকশন প্রতিরোধ করা সম্ভব। সাবান দিয়ে দু হাত সঠিকভাবে ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলায় রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে সাশ্রয়ী পণ্থা। সকল পর্যায়ের জনসাধারণ ও স্কুল ছাত-ছাত্রীরা ল্যাট্রিন ব্যবহারের সময় স্যান্ডেল পায় দিয়ে ল্যাট্রিনে যাবে ও ফেরার পর খাবার আগে দু হাত সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ঘষে কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবে। শিশুরা, মা ও পরিচর্যাকারীরা ল্যাট্রিন ব্যবহারের পর শিশুকে শৌচ করানোর পর ও শিশুকে খাওয়ানোর আগে দু হাত সাবার দিয়ে ঘষে কব্জি পর্যন্ত অবশ্যই পায় দিয়ে যেতে হবে। ল্যাট্রিনে যাওয়ার আগে স্যান্ডেল পায় দিয়ে যেতে হবে। খাবার পরিবেশনের আগে ও খাবারের পূর্বে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে ও যত্রতত্র পায়খানা প্রস্রাব করা যাবে না। স্যানেটারি ল্যাট্রিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যাবতীয় আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জাতীয় সেনিটেশন মাসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলা প্রশাসন, ব্র্যাক ওয়াশ কর্মসূচি ও জন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনাসভা করেছে। গতকাল বুধবার সকালে মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোকতার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান গুলনাহার বেগম, ইউপি চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন, শিক্ষা অফিসার গোলাম ফারুক, মেডিকেল ব্র্যাক ওয়াশ কর্মসূচির সিনিয়র ম্যানেজার ওয়ালিয়ার রহমার, সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুর, খাদ্য কর্মকর্তা নুর ইসলাম, সমবায় অফিসার নাসরীন সুলতানা র্যালি ও আলোচনাসভায় বিভিন্ন স্তরের কর্মীসহ ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলো।
অনুরুপ মুজিবনগর জাগরণীচক্র ফউন্ডেশনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোকতার হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ সময় অত্র অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলো।