রহমান রনজু: ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়ে বিজয়ী হতে না পারার কষ্ট এখনো পীড়া দেয় সিরাজকে। তাই সারা বছরই দৌড়চর্চা করেন তিনি। দিন আনা দিন খাওয়া সংসারী এ দৌড়পাগল মানুষটা অন্তত শরীরটা ঠিক রেখেছেন। তিনি জানেন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। বয়স ষাটের কোটায়। কিন্তু এ বয়সেও মাইলের পর মাইল দৌড়ে চলেন সিরাজ। পেশায় পানের হাটের কেনানদার। মানে পানব্যবসায়ীদের পান কিনে দেন। বিনিময়ে ২-৩শ টাকা হাজিরা পান। তার একটাই টার্গেট চুয়াডাঙ্গার আগামী কোনো ম্যারাথন দৌড়ে তাকে জিততে হবে। দর্শনা থেকে চুয়াডাঙ্গা এক দৌড়ে বিজয়ী হলেই ইচ্ছে পূরণ হবে তার।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া বাজারপাড়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। বয়স ৫২ বছর। গেলো বছর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা কর্তৃক আয়োজিত ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নেন। দর্শনা থেকে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত একটানা দৌড়ে আসেন ঠিকই; তবে বিজয়ী হতে পারেননি। তার দাবি আমি সপ্তম স্থানে ছিলাম। এই দৌড় প্রতিযোগিতায় অন্যদের মধ্যে যারা অংশ নিয়েছিলো তারা বয়সে তরুণ। তাই সিরাজ বলেন, ওদের সাথে দৌড় দিয়ে আমি দর্শনা থেকে চুয়াডাঙ্গায় এসেছি। আমার একটা সান্ত্বনা পুরস্কারও পাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পাইনি। এ কারণেই আমি দৌড়চর্চা অব্যাহত রেখেছি। রোজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পানের হাটে যান দৌড় দিয়ে। একেবারে আলুকদিয়া থেকে মুন্সিগঞ্জ পশুহাট, মুন্সিগঞ্জ, নীলমণিগঞ্জ বা চুয়াডাঙ্গা। প্রতিদিন ১০-১২ কিলোমিটার দৌড়ে পান হাটে যান তিনি। সিরাজ বলেন, ইদানীং প্রচণ্ড গরম পড়ছে, তাই মাঝে মাঝে যানবাহনে উঠি। কিন্তু শীতকালে রোজই এক দৌড়ে পানের হাটে যাই। তার ইচ্ছে আলুকদিয়া থেকে ঝিনাইদহ এবং মেহেরপুর পর্যন্ত তিনি একটানা দৌড় দিতে চান। তাছাড়া এবার কোথাও ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা হলে সেখানে বিজয়ী হতে চান তিনি।
সিরাজের দৌড়ের প্রতি এই আগ্রহ দেখে মুন্সিগঞ্জ পশুহাটের পানহাট মালিক পক্ষ তাকে এক হাজার নগদ টাকা দিয়ে উৎসাহিত করে। অন্যতম হাটমালিক মো. খলিলুর রহমান মুন্সিগঞ্জ পশুহাট পানহাটের পক্ষ থেকে এ অর্থ তার হাতে তুলে দেন।