গাংনীতে বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর দেহভোগ : বিয়ের দাবিতে ছাত্রীর অনশন

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর দেহভোগের অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন দেহভোগ করলেও বিয়ে না করায় শিক্ষকের বাড়িতে অনশন করছেন ওই ছাত্রী। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষ নেয়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, হাড়াভাঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলাল হোসেন পরীক্ষায় সহযোগিতা করা ও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘ তিন বছর যাবত ওই বিদ্যালয়ের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীর দেহভোগ করে আসছে। সম্প্রতি শিক্ষক বেলাল হোসেনকে বিয়ের চাপ দিলে বেকে বসেন তিনি। বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রীর পিতা স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিবুলকে জানান ও প্রধান শিক্ষককে অবহিত করেন। প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে ছাত্রীর পিতাকে মীমাংসার প্রস্তাব দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য গ্রামে বেশ কয়েকবার বৈঠক করা হয়। ইউপি সদস্য মহিবুল, মোহন, শরিফুল ও নজরুলের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিয়ের জন্য শিক্ষক বেলালকে চাপ দেয়া হলে তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করেন এবং ওই ছাত্রীর ক্ষতিপূরুণ বাবদ এক লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন।

প্রতারণার শিকার ছাত্রীটি জানান, বিয়ের জন্য সে তার সম্ভ্রম হারিয়েছে যা টাকার বিনিময়ে সমাধান সম্ভব নয়। বিয়ে না করলে আমরণ অনশন করা হবে বলেও হুমকি দেয় ছাত্রীটি। তিনি আরো জানান, প্রধান শিক্ষক আমার সব দায়িত্ব নিয়ে সব কিছু করে এখন আর পাশে থাকছেন না।

এদিকে গতকাল বিকেলে ওই ছাত্রী নিরুপায় হয়ে প্রেমিক শিক্ষকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। পরে অবশ্য স্থানীয় লোকজন তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। বিয়ে নয়তো মৃত্যু ছাড়া তার কোনো উপায় নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই ছাত্রী।

অপরদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কোনো বিচার না করে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করায় প্রধান শিক্ষক টুটুল বেশ সমালোচিত হয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, বেলাল হোসেন প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় হওয়ায় তিনি কোনো সঠিক বিচার করছেন না।

অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। কোনো রেজুলেশনে ও কতো নম্বর স্মারকের চিঠিতে বহিষ্কার করা হয়েছে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, মৌখিক বহিস্কার করা হয়েছে। পরে চিঠি দেয়া হবে।

এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের এই বহিষ্কার সিদ্ধান্তকে নাটক ও আইওয়াশ আখ্যায়িত করে বলেছেন, শিক্ষকের এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার যদি সুষ্ট বিচার না হয় তাহলে কোনো ভরসায় অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের স্কুলে দেবেন। ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ছাত্রীর সাথে শিক্ষকের এ ঘটনায় তারা লজ্জিত। লোকমুখে নানান সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছে তাদের।

ইউপি মেম্বার মহিবুল জানান, তিনি মেয়েটির সুবিচারের জন্য বেশ চেষ্টা করেছেন কিন্তু শিক্ষক বেলাল হোসেন কোনো বিচার মানতে নারাজ। বিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন।

Leave a comment