স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা-বরিশাল রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্ভাব্যতা যাচাই কাজের জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ রেল ও চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ আশা করছে।
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে সর্বপ্রথম বরিশালে রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিলো। রেললাইনের জন্য তখন জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারের নিহত হওয়ার পর রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ আর আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, নাগরিক পরিষদ, নাগরিক সমাজ, বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে বরিশালকে রেল লাইনের সঙ্গে যুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করা হয়। বরিশালবাসীর দাবির মুখে অতীতে বিভিন্ন সরকারের আমলে রেল লাইন স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। বার বার সরকার পরিবর্তন আর প্রতিশ্রুতির মাঝেই কেটে গেছে টানা চার দশকের বেশি সময়। এ দীর্ঘ সময়ে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং রাজধানীর সঙ্গে বিমান সার্ভিস চালু হয়ে বার বার তা বন্ধ হয়েছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবৈধ রোটেশন পদ্ধতিতে লঞ্চ পরিচালনা করা হচ্ছে। বাস্তবে এ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হয়ে অবনতিই ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে রেলপথের খবর মানুষের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
রেলের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, এক বছরের মধ্যে ঢাকা-বরিশাল রেলপথ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হবে। পরবর্তী চার বছরে নির্মাণ কাজ শেষ করে রেল সার্ভিস চালু করা হবে। তিনি জানান, ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত যে নির্মাণাধীন রেল লাইন রয়েছে সেখান থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ করতে হবে। সম্ভাব্যতা যাচাই কাজ করার লক্ষ্যে গত ২৬ এপ্রিল ঢাকার রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। জিটুজি অর্থায়নের ভিত্তিতে চীনের প্রতিষ্ঠানটির কাজ করার কথা। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজে বিলম্ব না হলে রেল যোগাযোগ স্থাপনে আর কালক্ষেপণের আশঙ্কা নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে পায়রা সমুদ্রবন্দর ও পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার অর্থনৈতিক গুরুত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দ্রুত ও সহজ যোগাযোগ গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রেল যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি জানান, পদ্মা সেতু ও রেলপথ নির্মিত হলে বরিশালসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রা পাল্টে যাবে। বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জেবুনেচ্ছা আফরোজ এমপি বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারই সব সময় বেশি ভূমিকা রেখেছে।