আজ বুদ্ধপূর্ণিমা : বৌদ্ধধর্মাবলম্বী সকলকে শুভেচ্ছা

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ যুদ্ধ হিংসা হিংস্রতার নিষ্ঠুর ক্রোড়ে যেন দুলছে। অথচ দুনিয়ার প্রায় সকল ধর্মেই মানুষকে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ পথে চলতে নির্দেশ করে। গৌতম বুদ্ধ প্রবর্তিত তথা দর্শনজাত বৌদ্ধ ধর্মও তার একটি। গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা বটে।
বৈশাখী পূর্ণিমায় গৌতম বুদ্ধ আলোকিত মানবের আলোকচ্ছটা বিচ্ছুরণে বিশ্বমানবের প্রতি মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব, মানবতা, কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করেছেন। সকল প্রকার পাপাচার মনোবৃত্তি পরিহার, সত্কর্মের পরিপূর্ণতা এবং নিজ চিত্তের পবিত্রতাসাধনই বুদ্ধের অনুশাসন বা উপদেশ। বৌদ্ধধর্মের অষ্টমার্গের মধ্যে রয়েছে কোনো প্রাণী বধ না করা, চৌর্যবৃত্তি না করা, কোনো অবস্থাতেই মিথ্যা না বলা, অবৈধ কামাচার না করা ও নেশাদ্রব্য গ্রহণ না করার কথা ইত্যাদি।
আজ শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা। শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে বুদ্ধ খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে লুম্বিনী উদ্যানে জন্মগ্রহণ করেন। এ পূর্ণিমায় তিনি গয়ার নিরঞ্জনা নদীর তীরে বুদ্ধত্ব লাভ করে মহাজ্ঞানের অধিকারী হন। বৈশাখী পূর্ণিমার আরেক রাতে কুশীনগরে জমকশানন বৃক্ষমূলে তিনি ৮০ বছর বয়সে খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৩ অব্দে লাভ করেন মহাপরিনির্বাণ। বুদ্ধ দর্শনে মানুষের হৃদয়বৃত্তিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে যে শ্রেয়বোধ কল্যাণশক্তির মহিমা লুকিয়ে রয়েছে, তাকে উদ্বুদ্ধ করাই বৌদ্ধ দর্শনের প্রধান লক্ষ্য। পূর্ণিমা হচ্ছে পূর্ণতার প্রতীক, আলোর প্রতীক। বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ একই পূর্ণিমার আলোকোজ্জ্বল রাতে সংঘটিত হয়েছে বলেই বৈশাখী পূর্ণিমা আজ বিশ্বব্যাপি পরিচিত বুদ্ধপূর্ণিমা হিসেবে।
বৌদ্ধধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা তাই এক পরমলগ্ন, চিরস্মরণীয় তিথি। বৈশাখী পূর্ণিমার এ শুভদিনে বিশ্বের সকল মানুষের অন্তর জাগ্রত হোক অহিংসার মর্মবাণীতে; সাম্য-মৈত্রী-করুণা-দয়া ও প্রেমে উদ্ভাসিত হোক সকল মানুষের হৃদয়।