এবার শিক্ষককে বেড়ধক পেটালো স্কুলছাত্র!

স্টাফ রিপোর্টার: না, এখন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা যাবে না। পাঠ দেয়ার সময় শাসনের মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাই দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীকে নির্যাতন করার জন্য শিক্ষককে অভিযুক্ত হতে। কখন চাকরি চলে যেতে। কখনও বা অভিভাবকদের রোষানলে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের।

কিন্তু বার বার ফেল করা কোনো ছাত্রকে যদি পড়াশোনা নিয়ে বকাঝকা করা হয়, আর সেজন্য সে ছাত্র যদি শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়, তাহলে তার জন্য কী করা উচিত? এমন প্রশ্ন চেপে বসেছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বাহিরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাথায়। বিদ্যালয়ের বনমালী বিশ্বাস নামে এক সহকারী শিক্ষককে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করেছে নবম শ্রেণীর এক ছাত্র।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফকিরহাট উপজেলার মৌভোগ পুলিশ ক্যাম্পের কাছে। পরে স্থানীয়রা শিক্ষক বনমালীকে উদ্ধার করে ক্লিনিকে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। ঘটনার পর শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদে শিক্ষকরা তৎক্ষণিক ক্লাস বর্জন করেন।

বখাটে ওই ছাত্রের নাম সোহেল রানা। সে মৌভোগ গ্রামের লিঠু শেখের ছেলে। গত দুবছর ধরে ফেল করে করে সে নবম শ্রেণিতেই থেকে গেছে। পরীক্ষায় পাস করার তাগিদ ও পড়াশোনায় চাপ দিয়ে তাকে শাসন করেন ওই শিক্ষক। এতেই সে শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর শিক্ষক বনমালী বাইসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন। মৌভোগ পুলিশ ক্যাম্পের কাছে জাহিদের দোকান নামক স্থানে পৌঁছুলে বখাটে সোহেল রানা তার গতিরোধ করে। এ সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিক্ষককে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো শুরু করে। এতে মারাত্মক আহত হন শিক্ষক বনমালী। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে তাকে ধরাধরি করে ক্লিনিকে নিয়ে যায়।

জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবু হানিফ বাংলামেইলকে বলেন, বিষয়টি ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তারা মামলা করতে চাইলে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এজাহারভূক্ত করা হবে।

ফকিরহাট ইউএনও মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ওসিকে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।