দামুড়হুদায় কর্মসংস্থান কর্মসূচি কাজে শ্রমিকের নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দু মেম্বারের দ্বন্দ্বের জের
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা সদর ইউপির সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য রাশেদা মমতাজকে (৪৫) কোদালের উল্টো পিঠ দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাসুদুর রহমান। আহত মহিলা মেম্বারকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টার দিকে কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকের নাম দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে গত শনিবার থেকে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হয়। ওই ওয়ার্ডে ইতঃপূর্বে ৩১ শ্রমিক কাজ করলেও এবার আরো ৫ জন শ্রমিক বাড়ানো হয়। অতিরিক্ত ওই ৫ জন শ্রমিকের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান শরীফুল আলম মিল্টন একজন এবং মাসুদ মেম্বার ৪ জন শ্রমিকের নাম দেয়ার জন্য মহিলা মেম্বার রাশিদা মমতাজের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশে একজনের নাম দেয়া হলেও ৪ জনের স্থলে দুজনের নাম দেয়ার জন্য বললে সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাসুদ মেম্বার। গতকাল সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চিৎলা গুচ্ছগ্রাম এলাকায় কাজ পরিদর্শনে যান মহিলা মেম্বার রাশেদা মমতাজ। এ সময় মাসুদ মেম্বার ঘটনাস্থলে পৌছে মহিলা মেম্বারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এরই এক পর্যায়ে মাসুদ মেম্বার এক শ্রমিকের কাছ থেকে কোদাল কেড়ে নেন এবং কোদালের উল্টো পিঠ দিয়ে মহিলা মেম্বারের মাজায় স্বজোরে আঘাত করেন। কোদালের আঘাতে মহিলা মেম্বার রাশিদা মমতাজ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং গুরুতর জখম হন। তার মাজার হাড় ভেঙে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। উপস্থিত শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহত মহিলা মেম্বারকে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. আবু হাসানুজ্জামান নুপুর বলেন, এক্স-রে করার পরই তার আঘাতের বিষয়টি সঠিকভাবে জানানো সম্ভব হবে। খবর পেয়ে দুপুরে আহত মহিলা মেম্বারকে হাসপাতালে দেখতে যান দামুড়হুদা উপজেলা মহিলা উন্নয়ন ফোরামের সভানেত্রী ভাইস চেয়ারম্যান ছালমা জাহান পারুল, সততা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম নুরুন্নবী ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল। মহিলা উন্নয়ন ফোরামের সভানেত্রী তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, একজন নারী জনপ্রতিনিধিকে এভাবে মারধরের বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি খুবই অমানবিক। তিনি অভিযুক্ত ওই মেম্বারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানান।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান জানান, তিনি থানায় এসেছিলেন। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত মহিলা মেম্বার বাদী হয়ে মাসুদ মেম্বারের নামে একটি অভিযোগ করেছেন। ৫ জন শ্রমিকের নাম দেয়ার বিষয়ে আহত মহিলা বলেন, ওই ৫ জনের টাকাইতো ভাগাভাগি হবে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান নেবেন একজনের টাকা আর বাকি ৪ জনের টাকা নেবেন মাসুদ মেম্বার। আপনার কয়টা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পিআইসি হিসেবে আমার ভাগেও একটা আছে। একজন শ্রমিকের দিন হাজিরা ২২৫ টাকা বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান শরীফুল আলম মিল্টনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।