আজ চৈত্র সংক্রান্তি : বিদায়ী বছরের শেষ দিন

আজ চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্রের শেষ দিন। ঋতুরাজ বসন্তেরও। বাংলা সন ১৪২১ তার শেষ গান গেয়ে আজ বিদায় নেবে। বসন্তকে বিদায় জানিয়ে বাঙালির সামনে আরো একটি নতুন বছর ১৪২২। আগামীকাল বিশ্বজুড়ে বাঙালিরা মেতে উঠবে বর্ষবরণ উত্সবে। বোশেখ আসবে নতুন দিনের বারতা নিয়ে।

এই চৈত্র সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসে লোকোত্সব। বাংলা মাসের শেষ দিনটিকে ঘিরে লোকাচার অনুসারে নানা ক্রিয়াকর্ম করে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে প্রধানত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এটি নানা আড়ম্বরে পালন করে থাকে। কালক্রমে বাঙালির সংস্কৃতিতেও কম বেশি লেগেছে বদলের বাতাস। আগে গ্রামবাংলায় এ চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে আচার-অনুষ্ঠানের অন্ত ছিলো না। চৈত্র সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষে গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থরা মেয়ে-জামাইকে সমাদর করে বাড়ি নিয়ে আসতো। অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্থরা সকলকে নতুন জামা-কাপড় দিতো এবং খাবার-দাবারের আয়োজন করতো। সেই সংস্কৃতি এখন মূলত বছরের প্রথম দিনটিকে ঘিরেই। এরপরও বাংলা সনের শেষ দিনটিতে আজ চৈত্র সংক্রান্তির মেলা ও নানা পর্ব গ্রামবাংলায় যে একেবারেই হচ্ছে না তাও নয়। চৈত্র সংক্রান্তির আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়েই মূলত বর্ষবরণের উত্তাপ ছড়ায়। আজ ঝিনাইদহের নবদোয়ায় চৈত্রমেলায় শুধু সনাতনদেরই পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে না, সকল ধর্মের নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি এ মেলার পূর্ণতা দেয় প্রতিবার। এবারও চৈত্র সংক্রান্তির আয়োজনে কমতি নেই। বর্ষবরণের পূর্বদিনের আয়োজন যতোটা না বছর বিদায়ের, তার চেয়ে ঢের বেশি থাকে নতুনকে স্বাগত জানানোরই তাগিদ। চৈত্র সংক্রান্তি বছর বিদায়ের ক্লান্তিকে তাড়িয়ে নবোদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সকলকেই যেন করে তোলে প্রত্যয়ী।

সাদর আমন্ত্রণে মাঙ্গলিক চিন্তা ও শুভবোধের উদ্বোধনে হৃদয়সিক্ত প্রাপ্তির ডালিতে নতুনের অভিষেকের দিন পয়লা বোশেখ। শুভ হালখাতা, মেলা, গান-বাজনা, প্রদর্শনীর আয়োজনে বাঙালি উদযাপন করবে এ দিনটি। সকলের জীবনে কল্যাণ, প্রাপ্তি এবং প্রেরণার স্বপ্ন পূরণে আসুক নতুন সূর্য।

Leave a comment