মাজেদুল হক মানিক: পিচ রাস্তার ওপরে বসা এক যুবক। প্রথম দেখায় পাগল বলে মনে হবে। কাছে গিয়ে দেখা গেলো পুরুষাঙ্গ চেপে ধরে হামাগড়ি দিয়ে রয়েছে। নাম পরিচয় এবং বসে থাকার কারণ জানতেই বাঁচার আকুতি। নাম-ঠিকানা পরে হবে আমাকে আগে হাসপাতালে নিয়ে চলেন ভাই। আমি বাঁচতে চাই। যুবকের আশপাশে থোক থোক রক্ত দেখে পুলিশও আতকে ওঠে। রোববার দিনগত রাতে মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর-বাবুপুর তিন রাস্তার মোড়ে বাঁচার আকুতি জানানো যুবকের নাম আশিক হোসেন (২০)। সে সদর উপজেলার চকশ্যামনগর গ্রামের নাছির উদ্দীনের ছেলে এবং মেহেরপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রির ছাত্র। মহাজনপুর গ্রামের এক বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় ওই যুবক।
ঘটনার এমন বর্ণনা দিয়ে কোমরপুর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এএসআই সুফল কুমার জানান, তিনি টহল দল নিয়ে রাতে ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় আশিককে উদ্ধার করেন। পুরুষাঙ্গ কেটে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। যুবকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরো বলেন, আশিক ও তার বন্ধু টেংরামারী গ্রামের রহমান মোটরসাইকেলযোগে রোববার সন্ধ্যায় মহাজনপুর গ্রামের একটি বাড়িতে আসেন। আশিককে রেখে বাড়ি ফিরে যায় রহমান। সেখানে এক নারী ও তার লোকজন ওড়না দিয়ে আশিকের হাত ও চোখ বেঁধে পুরষাঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয় তারা। পরে স্থানীয় এক দম্পত্তি তার হাত ও চোখ খুলে দিয়ে মেহেরপুর ফেরার রাস্তা দেখিয়ে দেন। চোখ বাঁধা সেই ওড়না দিয়েই আশিক পুরুষাঙ্গ বেঁধে চিৎকার করে স্থানীয়দের সহযোগিতা চায়। কিন্তু তার সহযোগিতায় কেউ ঘর থেকে বেরিয়ে আসেননি। তবে আশিক ও তার বন্ধু রহমান ওই নারীর নাম পরিচয় বলেনি।
এদিকে গতকাল সকালে মহাজনপুরসহ এলাকায় ঘটনাটি জানাজানি হলে বিভিন্ন গুঞ্জন ওঠে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে মুখরোচক সমালোচনা শুরু হয়। স্থানীয়দের অনেকেই মন্ত্রব্য করে বলেছেন, মহাজনপুর গ্রামের এক নারীর কাছে নিয়মিত যাওয়া-আসা রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির। আশিক হয়তো সেখানেই গিয়েছিলো। কিন্তু কি করণে তার পুরুষাঙ্গ কাটা হয়েছে তা নিয়ে এলাকার মানুষ ভিন্ন ভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছে।
আশিককে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। আশিকের এক আত্মীয় জানান, পুরুষাঙ্গের প্রধান ধমনী কাটা পড়েছে। এতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়। আশিক আপাতত শঙ্কামুক্ত হলেও সে পুরষাঙ্গের জীবনী শক্তি ফিরে পাবে কি-না তা নিয়ে শঙ্কিত চিকিৎসকরা।