আকাশেই বিমানে আগুন : অল্পের জন্য রক্ষা ৩৭৫ যাত্রী

সিঙ্গাপুর আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন : যান্ত্রিক ত্রুটি

 

স্টাফ রিপোর্টার: অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এয়ারবাসের (ফ্লাইট নং বিজি ০৮৫) ৩৭৫ যাত্রী। সিঙ্গাপুর আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিমানটি। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটির ককপিটে আগুন ধরে গেলে শনিবার রাত পৌনে ৯টায় বিমানটি নিরাপদে শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করানো হয়।

জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফ্লাইটি হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের নির্ধারিত সময় ছিলো। বাংলাদেশের আকাশ সীমায় প্রবেশের পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটির ককপিটে আগুন ধরে যায়। পাইলটরা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে বিমান থেকে প্রায় সব জ্বালানি তেল ফেলে দেন। সামান্য কিছু তেল রেখে প্রায় আড়াই ঘণ্টা আকাশে চক্কর খায় এয়ারবাসটি। শেষে শনিবার রাত পৌনে ৯টায় বিমানটি নিরাপদে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করানো হয়।

পাইলটরা বিমানে থাকা স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আকাশেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। আগুনে বিমানটির ভেতরে ধোয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে খবর দেয়া হয় কন্ট্রোলরুমে। সেখান থেকে পুরো বিমানবন্দরে জারি করা হয় রেডঅ্যালার্ট। বিমানবন্দর ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলোকে নেয়া হয় রানওয়েতে। প্রস্তুত করা হয় অ্যাম্বুলেন্সসহ যাবতীয় উদ্ধাকারী দলকে। খবর দেয়া হয় ফায়ার কেন্দ্রীয় কন্ট্রোলরুমে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগুন লাগার সাথে সাথে বিমানে থাকা যাত্রী ও কেবিন ক্রুরা চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারা সবাই চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। অনেকে আল্লাহকে ডাকতে থাকেন। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। মহিলা ও শিশুরা আহাজারি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় বিমানের ভেতর এক ভয়ানক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

রাত ৯টায় বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দরের নর্থ ফ্রস্ট জোনে অবতরণ করানোর পর বিমানে থাকা যাত্রীদের একে একে উদ্ধার করা হয়। বিমান থেকে যাত্রীরা বলেন, আমরা সবাই নতুন জীবন পেলাম। তারা একে অপরকে এবং উপস্থিত আত্মীয়স্বজনদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বাংলাদেশ বিমান সূত্র জানায়, এয়ারবাসটি সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলো। এর যাত্রী সংখ্যা ছিলো ৩৭৫ জন। রাডারের মাধ্যমে কন্ট্রোলরুমে খবর পৌঁছানোর সাথে সাথেই বিমানবন্দরে দেয়া হয় রেড অ্যালার্ট। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ছুটে যান বিমানবন্দরে। সাইরেন বাজিয়ে বিমানবন্দর ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো একের পর এক রানওয়েতে নেয়া হতে থাকে। আশু বিপদের আশঙ্কায় তাৎক্ষণিভাবে বন্দরে সবধনের ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়া হয়। অবশেষে যাত্রীদের সবাইকে নিরাপদে নামায় বিমান কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানান, বিমানের তেল না ফেলা হলে অবতণের সময় বিমানটি বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো। এ কারণে বিমান থেকে সব তেল ফেলে অবতরণ করানো হয়।