চুয়াডাঙ্গা সদরের ২১টি প্রাইমারি স্কুলে দপ্তরি-কাম নৈশপ্রহরী পদে চাকরি প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে আগেভাগেই

 

খাইরুজ্জামান সেতু/আলম আশরাফ: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগে প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হয়েছে। চাকরি প্রতি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা অর্থবাণিজ্য হয়েছে বলে ব্যাপক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ফলে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই কার হচ্ছে চাকরি বা কে পাচ্ছে চাকরি তাদের নাম ভাসছে বাতাসে। বিষয়টি নিয়ে বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নে সর্বত্রই বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। নেপথ্যে না কি রয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ বাণিজ্যে!

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা উপজেলার ২১টি বিদ্যালয়ে দপ্তরি-কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগের বিপরীতে আবেদনপত্র জমা পড়ে ১৩১টি। যাচাই-বাছাই শেষে বাদ পড়ে ১টি। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ কমিটি আগামী ২৩ মার্চ চুয়াডাঙ্গা-১ নির্বাচনী এলাকার ১১টি বিদ্যালয় এবং ২৪ মার্চ চুয়াডাঙ্গা-২ নির্বাচনী এলাকার ১০ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। তবে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার একটি বিদ্যারয়ে কোরাম শূন্যতার কারণে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত নাও হতে পারে। যুক্তিভিত্তিক চাকরি হলেও চাকরি প্রতি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে কেউ কেউ। নিয়োগ কমিটির সাখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে মোটা অঙ্কের অর্থবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।

যে সকল বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে এবং যারা আবেদন করেছেন তারা হলেন- ১ নং চুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শাকিল আহমেদ, শহিদুল ইসলাম ও শিলন কুমার অধিকারী। মাস্টারপাড়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিক, আলআমিন, রুহুল আমিন, জাহিদুল ইসলাম ও রবিন আহমেদ। কুলচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জাহিদুল ইসলাম, সুজন মিয়া ও রওশন মিয়া। পীতম্বরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রিন্টু হোসেন, তরিকুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম। কুশোডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নয়ন আলী, আনিছুর রহমান, সুজন আলী, মাহমুদ রানা, মাহামুদুল হাসান, শাহিন রেজা ও টিটন আলী। ধুতুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাজমুল কবীর নান্নু, আব্দুল্লাহ আল মামুন, জামাল উদ্দীন, সুজন আলী, সবুজ আলী, মমিনুল ইসলাম ও ফকরুল ইসলাম। সিঁন্দুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফরহাদ হোসেন, মনিরুজ্জামান, আব্দুল হামিদ, হাসিবুর রহমান, জহুরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান ও রুবেল পারভেজ। শুম্ভুনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিজানুন রহমান, সুমন আহম্মেদ, শরিফুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, গোলাম মাসুদ ও হুমায়ন কবীর। নূরনগর-জাফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেলিম উদ্দীন, জহুরুল ইসলাম ও কবীর হোসেন। ফুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নসিব আলী, সেলিম উদ্দীন, আরিফুল হোসেন, জাকিরুল ইসলাম ও মইফুল ইসলাম। দীননাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমরান হোসেন, হুমায়ন কবীর, নূর গনি, ইব্রাহিম, জাহিদ হাসান ও আরশাদ। তিতুদহ ইউনিয়নের খাড়াগোদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনিছুর রহমান, আলামিন, মনোয়ার হোসেন, শাহীন হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান, মনিরুল ইসলাম ও বিপুল হোসেন। গহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাজিদুল হক, রুবেল হোসেন, সাদেরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান, আহাদ আলী, এনসান আলী, আব্দুর সবুর, সেলিম হোসেন ও গোপাল চন্দ্র। বাটিকাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিরাজুল ইসলাম, বাইজিদ হোসেন, ফরিদুল ইসলাম, এনামুল হক, মনিরুজ্জামান, গোবিন্দ কুমার, সাজেদুর রহমান, আসাদুজ্জামান ও আব্দুস সালাম। গিরীশনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোস্তাফিজুর রহমান, এমরান হোসেন, সোহেল রানা, জাহিদুল ইসলাম ও আলমগীর কবীর। তেঘরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাসিবুল হক, ইসলাম উদ্দীন, সাইফুল ইসলাম, হযরত আলী, আসাদুজ্জামান, ইদ্রিস আলী ও শমীম কবীর। কালোপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শাহিন আলম, রিপন হোসেন, শাহাবুল আলম, জাফরুল হাসান, আশরাফুল হক, সুজন আলী ও স্বপন আলী। বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শাহাবুদ্দীন হোসেন, আক্তারুজ্জামান, বিপুল হোসেন, ফরহাদ হোসেন, মোখলেছুর রহমান, শামীম হোসেন, খলিল হোসেন, শামীম হোসেন, সুজন মেহেমুদ, কামল হোসেন ও আলী আহম্মেদ। কোটালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জামাল উদ্দীন, জাহিদুল ইসলাম, শরিফুল হক, রায়হান উদ্দীন, সাজ্জাদ হোসেন, আনোয়ার হোসেন, জামাল উদ্দীন, সাইফুল ইসলাম ও আক্তার আলী। ডিহিকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তরিকুল ইসলাম, আকমত আলী, জাহিদুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ ও সোলাইমান ইসলাম। রাঙ্গিয়ারপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জসিম উদ্দীন, জুয়েল রানা, টুটুল আহম্মেদ ও হাফিজুর রহমান। ওই দু দিন সকাল ৯টায় ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কমিটির সভাপতি ইচ্ছা করলে লিখিত পরীক্ষাও নিতে পারেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেছে, নীতি-নির্ধারণীদের অর্থ লেনদেনে ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি থাকলেও সেদিকে কর্ণপাত নেই অর্থবাণিজ্যকারীদের। এ বিষয়ে এমপি প্রতিনিধি ও নিয়োগ কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান টিপুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অর্থ লেনদেনের এ বিষয়টি এতোটাই ওপেন সিকরেট হয়ে গেছে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই চাকরি প্রার্থীদের নামও সেই সাতে প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দেবে বলে সচেতনমহল মনে করছে।

Leave a comment