মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৫তম জন্মজয়ন্তী পালিত

শাহনেওয়াজ খান সুমন: ‘জিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেন পরনা, মন তুমি মরার ভাব জান না, মরার আগে না মরিলে পরে কিছুই হবে না/আমি মরে দেখেছি, মরার বসন পরেছি, কয়েকদিন বেঁচে আছি, তোরা দেখবি যদি আয় পাগলা কানাই বলতেছি।’ এমন শ শ গানের শ্রষ্ঠা মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২০৫তম জন্মজয়ন্তী ছিলো গতকাল সোমবার। মরমী এ কবি ঝিনাইদহের বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন। আর ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় তিনি পরলোক গমন করেন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি দূরন্ত স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাইয়ের ঘরে মন না টেকাতে অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি মানুষের বাড়ি রাখালের কাজ করেছেন। গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি ও মেধা ছিলো প্রখর। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কণ্ঠে পরিবেশন করতেন। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে। পাগলাকানাইয়ের গান আজও গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
তার ২০৫তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ ৩ দিনব্যাপি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে আয়োজন করেছে। সকালে কবির মাজারে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন পাগলাকানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের কর্মীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পাগলাকানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবদুর রশীদ, পাগলাকানাই গবেষক আক্কাস আলী, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
প্রথম দিনে মিলাদ মাহফিল, লাঠিখেলা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও লোক সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হয়।। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। এছাড়া বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. আব্দুল ওয়াহেদ জোয়ারদার ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন। দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোকসঙ্গীত ও নাটক।
আগামী ১১ মার্চ শেষ দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা, লোকসঙ্গীত ও ভাব সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা। শেষ দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি আব্দুল হাই। বিশেষ অতিথি থাকবেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার ও ঝিনাইদহ-৩ আসনের এমপি অধ্যক্ষ নবী নেওয়াজ।

Leave a comment