মসজিদ কমিটি গঠন নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জখম বজলুর রহমান বুলুর মৃত্যু : গ্রেফতার ৩

আলমডাঙ্গার পল্লি পাইকপাড়ায় কমিটি গঠনের পূর্বেই শব্দ করে আমিন বলাদের বাদ দেয়া নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার পাইকপাড়া গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দু দল গ্রামবাসীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর জখম বজলুর রহমান বুলু (৫০) অবশেষে মারা গেছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার কম্বাইন্ড ম্যাটস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ মারামারির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ গতকাল তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। মৃতদেহ গতকালই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে নেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। সংশ্লিষ্টরা এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, গ্রামে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে।

bulor fail sobe

জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বাদজুমা মসজিদের কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের আঘাতে রক্তাক্ত জখম পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে বজলুর রহমান বুলুকে উদ্ধার করে প্রথমে হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তার অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে তাকে বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের পুলিশ ফাঁড়ি মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র বাদজুমা গ্রামের দু পক্ষ তুলকালাম কাণ্ড ঘটায়। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে বিপত্তি ঘটে। এ পদে প্রথমে যাকে মনোনীত করার প্রস্তাব দেয়া হয়, তার প্রতিবাদ করে সাবেক সভাপতি হাজি আলী আজগর বলেন, কমিটিতে যারা শব্দ করে আমিন বলেন এবং যারা আহলে হাদিস করেন তারা কমিটিতে থাকতে পারবেন না। তার এ মন্তব্যের পরই শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এরপর শুরু হয় হাতাহাতি। শেষে কোপাকুপি। হেঁসো, রামদা, লাঠি নিয়ে পরস্পর দু পক্ষ দু পক্ষকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে। এতে মহিলাসহ উভয়পক্ষের ১২-১৩ জন রক্তাক্ত জখম হন। এরা হলেন- পাইকপাড়া গ্রামের আলিম উদ্দীনের ছেলে নাজিম (৩০) ও জসিম (২৫), আলিম উদ্দীনের স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৪৫), আলফাজ মণ্ডলের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫) ও আব্দুস সালাম (৩০), হাজি আলি আজগর (৬০), আলি আজগরের ছেলে আব্দুস সাত্তার (৪৫), মৃত তানজিলের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৫), মৃত আকবরের ছেলে বজলুর রহমান বুলু (৫০) প্রমুখ।

৩ ভাই ও ৬ বোনের মধ্যে নিহত বজলুর রহমান বুলু ছিলেন ভাইদের মধ্যে বড়। তিনি ছিলেন ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জনক। গতকাল রাত ১০টার দিকে লাশ চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালমর্গে নেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় লাশ গ্রামে নিয়ে দাফন করার কথা রয়েছে। তার মৃত্যুর সংবাদে আত্মীয়পরিজনসহ গ্রাববাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এরা হলেন- পাইকপাড়া গ্রামের আলিম উদ্দীনের ছেলে জসিম (২৬), আফাজ উদ্দীনের দু ছেলে কামাল উদ্দীন (৩৫) ও আব্দুস সালাম (৩০)। ইতঃপূর্বেও এ ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a comment