গরমের শুরুতে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া, ভর মরসুমে কী হবে?

গরম মরসুম শুরু হতে না হতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিদ্যুতের বেহাল চিত্র ফুটে উঠতে শুরু করেছে। অবশ্য গত কয়েক বছর তার আগের বছরগুলোর তুলনায় বিদ্যুত পরিস্থিতি বেশ ভালো ছিলো। কিন্তু এবার? নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, বিদ্যুত শুধু ভ্যাপসা গরমে শীতল বাতাসের জন্য নয়, বিদ্যুত জনজীবনে এমনভাবে জড়িয়ে পড়েছে, যা না হলেই যেন মুহূর্তটাও অনেকের জন্য অচল। সে কারণেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ জরুরি। অচলদশা কাটাতে এবং ছোট বড় শিল্প টেকানোর পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন হবে কীভাবে?

চলতি গরমের শুরুতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিদ্যুতের লোডশেডিঙের ধরন দেখে অনেকেরই মাঝে প্রশ্ন, তবে কি বিদ্যুত আমাদের ভোগাবে? মরসুমের শুরুতেই যদি চাহিদা মতো বিদ্যুত না পাওয়ার কারণে বা অজুহাতে দফায় দফায় লোডশেডিং শুরু হয়, তা হলে গরমের ভরা মরসুমে কি হবে? এসব প্রশ্ন সঙ্গত কারণেই বিদ্যুত গ্রাহক সাধারণের মনে দানা বেধেছে। অবশ্যই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত বিজ্ঞান যুগে উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত। বিদ্যুত ছাড়া যেমন ডিজিটাল হয় না, তেমনই উন্নয়নও আশা করা যায় না। চলতি মরসুমের প্রথম বৃষ্টিপাতের দিন ৪ ঘণ্টার অধিক সময় চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত সরবরাহ করতে পারেনি বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ। কেন? বিতরণ কেন্দ্রের ত্রুটিই নাকি শনাক্ত করতে সময় কেটেছে অনেক। পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহ থেকে অভিজ্ঞজনকে আনতে হয়েছে। এরপরও শতভাগ ত্রুটিমুক্ত হয়নি। সে কারণে শঙ্কা রয়েছেই, যেকোনো সময় আবারও দীর্ঘ সময় ওরকম বিদ্যুতবিহীন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে। আর এই যে দিনে রাতে মাঝে মাঝেই বিদ্যুতের ভেলকিবাজি? সংশ্লিষ্টদের সরল জবাব, লোডশেডিং। চাহিদামতো না পাওয়া গেলে লোডশেডিং তো দিতেই হবে!

বর্তমান সরকার বিদ্যুতখাতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পর সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধিই শুধু করা হয়নি, দেশের বিদ্যুতচাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও বিদ্যুত কেনা হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে দফায় দফায় বিদ্যুতের দামও বাড়ানো হয়েছে। তা হলে গ্রাহক সাধারণ কেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত পাবে না? বিদ্যুত না পেলে বিদ্যুতনির্ভর বহু ক্ষুদ্র শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। উদ্যোক্তা হন দে‌উলিয়া, বেকার সমস্যা বেড়ে যায়। বিনিয়োগে আগ্রহ হারান বিনিয়োগকারীরা। কর্মসংস্থান সঙ্কটের দেশে শিল্প গড়তে বিদ্যুত সরবরাহের নিশ্চয়তা দিতে হবে সবার আগে।