ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ফের পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে বিএনপি কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলে। জেলা বিএনপি দাবি করেছে, কোনো প্রকার ঘটনা ছাড়াই পরিকল্পিতভাবে সরকারি দলের লোকজন কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। ঝিনাইদহ সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন আজাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত শহরের কেপি বসু সড়কে অবস্থিত জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় বন্ধ ছিলো বিএনপি কার্যালয়টি। তারা অফিসের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে কার্যালয়ে চেয়ার, টেবিল, ফ্যানসহ আসবাবপত্র পুড়ে যায়। দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই দুর্বৃত্তরা স্থান ত্যাগ করলে স্থানীয় লোকজন পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শহরের হাটের রাস্তায় দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এরই প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নেতা জেএম রশিদুল আলম রশিদের নেতৃত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মীর ফজলে এলাহী শিমুল জানিয়েছেন, তাদের কার্যালয়ে ২৫০টি চেয়ার ছিলো। এছাড়া বেশ কয়েকটি টেবিল ছিলো। সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। এতে তাদের ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মসিউর রহমান জানান, সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই তারা বিএনপি অফিসে আগুন দিয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন মালামাল লুট করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছেন। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তবে কারা কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন আজাদ জানান, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। ঝিনাইদহ সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল জানান, কে বা কারা এ আগুন দিয়েছে পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়রি শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গরুবোঝাই ট্রাকে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের প্রতিবাদে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।