মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিদ্যুত বিপর্যয়

আফগানের শেষ উইকেট পতনের কিছু পূর্বেই নিভলো টিভির বাতি

 

স্টাফ রিপোর্টার: আফগানিস্তানের শেষ উইকেটের পতনের আগেই চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ গোটা এলাকার টেলিভিশনের পর্দা কালো হয়ে যায়। নিভে যায় বিজলিবাতি। কী হলো কী হলো করে একে অপরের কাছে জানতে চাইলেও চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের খোদ বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ থেকেও বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধের মূল কারণ জানাতে অনেকটাই অপারগতা প্রকাশ করা হয়। অবশ্য নাকানি-চুবানির পর রাত ৯টা ২৬ মিনেটে বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। স্বস্তি ফিরলেও বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাথে খেলতে নেমে আফগানিস্তানের শেষ উইকেটের পতনের দৃশ্যটা লাইভ দেখার সুযোগ হয়নি চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের ক্রীড়ামোদী টিভি দর্শক-স্রোতার।

বিকেলে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। সোয়া ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণকেন্দ্র থেকে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরের বিদ্যুত গ্রাহক সাধারণকে বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় অনিশ্চয়তার মধ্যেই কাটতে থাকে। খোঁজ নিতে গেলে বিদ্যুত বিতরণকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, বিতরণ কেন্দ্রের ফিডারগুলোতে বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা যাচ্ছে না। ত্রুটিও পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে ঝিনাইদহ থেকে অভিজ্ঞ প্রকৌশলীকেও আনা হয়েছে। চেষ্টা চলছে। ত্রুটি শনাক্ত করতে পারলে তা মেরামতের পর বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। তবে কখন নাগাদ বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ঘুরতে থাকে অনিশ্চয়তায় ঘড়ির কাঁটা। শেষ পর্যন্ত রাত ৯টা ২৬ মিনিটে জ্বলে ওঠে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর শহরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বিজলিবাতি। টানা ৪ ঘণ্টা বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেকেরই দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এদিকে গতরাতে হাসপাতাল সড়কের ফিডারের ফেজ কেটে যাওয়ায় রাতে বেশ কিছু সময় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকে। অবশ্য রাতেই তা চালু করা হয়েছে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে শহরময় ভূতুড়ে অন্ধকার নেমে আসে। পিচরোডে কাদার কারণে বাইসাইকেল-মোটরসাইকেলের চাকা পিছলে ছোট-খাটো বেশ কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহত হয়। শহরে পানির লাইন সম্প্রসারণে পৌর কর্তৃপক্ষ প্রধান সড়কের পাশ দিয়ে ড্রেন খোড়ার কাজ শুরু করে। এর মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এদিকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে বিদ্যুত না থাকায় রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, বিদ্যুত শূন্য অবস্থায় রোগীদেরও চিকিৎসা দিতে ব্যঘাত ঘটছে। মোমবাতি ধরিয়ে অগত্য জরুরি কাজ সারেন তারা। অবশেষে বিদ্যুত ফিরে এলে মেহেরপুরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।

অনেকেই বলেছেন, শীতের পর মরসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই বিদ্যুতের যে বিপর্য দেখা দিলো, কালবোশেখি শুরু হলে বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার কতোটা নাজুক দশা দেখতে হবে তা কে জানে?